সর্বশেষ ইপিএস বেশ ভালো, ব্যবসায়েও উন্নতি ফরচুনের

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২১, ১৭:২২

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি ফরচুন সুজ লিমিটেডের সর্বশেষ ইপিএস বেশ ভালো। কোম্পানিটির ব্যবসায়েও বেশ উন্নতি হচ্ছে। এরই প্রভাবে এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৫.৪০ টাকা বা ১১৭ শতাংশ।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত মে মাসের ২৩ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২২.৩০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে ২৬.১০ টাকা বেড়ে আজ (২২ জুন) অবস্থান করছে ৪৮.৪০ টাকায়।

কোম্পানিটির শেয়ারদরের এমন উল্লম্ফনের কারণ হিসেবে দেখা গেছে, চলমান করোনা মহামারিতেও কোম্পানিটির ব্যবসায়ে ভালো উন্নতি। ব্যবসা ভালো করায় কোম্পানিটির ইপিএসও বেশ ভালো দেখা গেছে গত তিন প্রান্তিকে। এরই ফলে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কোম্পানি সচিব রিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা হচ্ছে রপ্তানিমুখী। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আমরা ব্যবসা করি। গত বছর করোনার কারণে আমাদের ব্যবসার সাময়িক সমস্য হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই সমস্য না থাকায় আমাদের ব্যবসা আগের চেয়ে ভালো যাচ্ছে।’

রিয়াজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ বাড়লেও আমাদের ব্যবসা যেহেতু ইউরোপের সঙ্গে তাই এতে আমাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়বে না।’

কোম্পানিটির শেয়ারের দর বাড়ার পেছনে কোনো ধরনের সংবেদনশীল তথ্য তাদের কাছে নেই বলে জানান কোম্পানি সচিব। বলেন, যদি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির পেছনে কোনো তথ্য থাকত তাহলে তা অবশ্যই ডিএসইতে জানিয়ে দেয়া হতো।

ডিএসইও কোম্পানিটির কাছে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য চেয়েছিল। জবাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে তাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

তবে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বাড়ার পেছনে কোম্পানিটির ভালো ইপিএস এবং ব্যবসায় উন্নতিই মূল কারণ বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

কোম্পানির তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, (জুলাই ’২০ থেকে মার্চ ’২১) নয় মাসে কোম্পানিটির টার্নওভার হয়েছে ১০৫ কোটি আট লাখ নয় হাজার টাকা। এ থেকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১.০৫ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৩.৭০ টাকা।

কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের শ্রেণি বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সাল থেকে এই কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমছে। ২০২০ সালে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির মালিকানা ছিল ১৫ শতাংশ, বর্তমানে তা কমে অবস্থান করছে ১২.৮৩ শতাংশে।

তবে শেয়ারমূল্য বৃদ্ধিতে এর প্রতি আগ্রহ বেড়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। ২০২০ সালে কোম্পানিটির মালিকানায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ছিল ৫৪.০৭ শতাংশ, বর্তমানে তা ৫৬.২৪ শতাংশে অবস্থান করছে।

আর কোম্পানিটির ডিরেক্টরদের কাছে রয়েছে মালিকানার ৩০.৯৩ শতাংশ শেয়ার।

বর্তমানে কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ রয়েছে নয় কোটি ২৯ লাখ টাকা। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৮৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

২৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারসংখ্যা ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৪টি। ওআইসি ব্যতীত তাদের রিজার্ভ এবং উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সবশেষ কোম্পানিটি ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণ করে। এর মধ্যে পাঁচ শতাংশ নগদ এবং পাঁচ শতাংশ বোনাস।

পাদুকা শিল্পের এই কোম্পানিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৫৭৯তম কমিশন সভায় আইপিও অনুমোদন দেয়। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০ টাকা মূল্যের দুই কোটি ২০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এই টাকা কোম্পানিটির মেশিনারিজ ক্রয়, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ এবং আইপির কাজে ব্যয় করা হয়।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/এসআই/মোআ)