শিশুদের ক্ষেত্রে তৃতীয় ওয়েভ আরো ভয়ংকর হতে পারে

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২১, ১৮:১৪

ডা. নুসরাত সুলতানা

সারা বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়েভের অন্তর্বর্তীকালীন সময় সাড়ে পাঁচ মাস। প্রথম ওয়েভের পিক থেকে দ্বিতীয় ওয়েভের পিক পর্যন্ত হিসেব করে এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়টি বের করা হয়েছে। ভারতে এই সময়টি সর্বোচ্চ (৭.৫ মাস)। আক্রান্তের হার দ্বিতীয় ওয়েভে ৭৫ শতাংশ বেশি, কিন্তু ভারতে ৩২০ শতাংশ বেশি। এই তো গেলো বিশ্বের পরিসংখ্যান।

এইবার আসি বাংলাদেশের কথায়। শতকরা আক্রান্তের হার হিসেব করে যে প্রথম আও দ্বিতীয় ওয়েভের যে পিক পেয়েছি তার মধ্যে ব্যবধান ১ বছর। কিন্তু এই পরিসংখ্যান কি সঠিক চিত্র প্রদর্শন করছে। উত্তরটা নেতিবাচক হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ টেস্টের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত নগন্য। ফলে আসল পিকটা মিস করেছি বলে আমার বিশ্বাস।

তৃতীয় ওয়েভ যে আসবেই তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এখন থেকেই সেই  রোডম্যাপ তৈরি করলে আগামী ওয়েভটি মোকাবিলা করা আমাদের জন্য সহজ হবে। প্রথমত জেনে নেই বাংলাদেশের কতজন মানুষ প্রাকৃতিকভাবে বা ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে? মাত্র ১ শতাংশ। তাহলে বাকী ৯৯ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে (যারা ভ্যাক্সিন নেননি বা কোভিডে আক্রান্ত হননি)।

তাহলে তৃতীয় ওয়েভ মোকাবিলা করতে কি কি করতে হবে?

১। যত দ্রুত সম্ভব পুরোদেশকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনতে হবে।

২। টেস্টের সংখ্যা আরো অনেক গুন বাড়াতে হবে৷ পয়েন্ট অফ কেয়ারে  র‍্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. দ্রুত হটস্পটগুলো বের করতে হবে।

৪. জেনোম সিকুয়েন্সিং এর প্ল্যাটফর্ম আরো অনেক বাড়াতে হবে।

৫. হাইফ্লো অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াতে হবে।

৬. বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে যন্ত্রপাতি ও জনবলে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে।

৭. ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে কঠিনভাবে লকডাউন কার্যকর করতে হবে।

তৃতীয় ওয়েভ আরো ভয়ংকর হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই আঘাত শিশুদের উপর মারাত্মকভাবে পড়তে পারে। তাই সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। দয়া করে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরুন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ভাইরোলজী বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

ঢাকাটাইমস/২২জুন/এসকএস