কী নিয়ে মুনিয়ার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন নুসরাত?

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২১, ২০:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ভাইবোনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল মোসারাত জাহান মুনিয়ার। ভাইয়ের সঙ্গে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। আর বোন নুসরাত জাহানের সঙ্গে নানা বিষয়ে ছিল মতপার্থক্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মুনিয়ার আত্মহত্যার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল ব্যক্তিগত হতাশা বা বিষণ্নতা। পরিবারের সদস্যের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন এই বিষণ্নতা বা হতাশার জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র এবং নুসরাতের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যে এটি প্রতীয়মান হয়েছে যে, মুনিয়ার উচ্চাভিলাষী জীবন এবং চলাফেরা নিয়ে নুসরাতের সঙ্গে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হতো। নুসরাতের দাবি মুনিয়া তার কথা শুনত না। এনিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন নুসরাত।

আবার নুসরাতের কর্মকাণ্ড বলছে ভিন্ন কথা। কারণ মুনিয়া গুলশানের যে বাসায় থাকতেন সেই বাসাটি ভাড়া নেওয়ার জন্য নুসরাত তার নিজের এবং স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়েছিলেন। মুনিয়ার বাসা ভাড়া নেওয়াতে তার আপত্তি না থাকলে কীভাবে তিনি এনআইডি দিলেন, সেটি নিয়েও প্রশ্ন আছে।

এদিকে মুনিয়ার মৃত্যুর পর পরই শারুন চৌধুরীর সঙ্গে তার বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শারুনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মুনিয়ার। মুনিয়া যে মানসিক বিষণ্ণতা ও হতাশায় ভুগছিলেন, সেটিও তার কথোপকথনে স্পষ্ট ছিল। যদিও শারুন চৌধুরী বরাবরই বলছেন এসব স্ক্রিনশট তৈরি করা।

গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের এক ফ্ল্যাটে মুনিয়ার লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পায় পুলিশ। মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

পুলিশ জানায়, মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লা শহরে, তার পরিবার সেখানেই থাকে। তিনি এখানে থেকে পড়াশোনা করতেন। ওই ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন। মরদেহ উদ্ধারের পর আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। ওদিকে ভাই আশিকুর রহমান সবুজ হত্যাকাণ্ডের মামলা করেছেন। আসামি করেছেন হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরীকে (শারুন চৌধুরী)। মুনিয়ার ভাই এবং ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে করা দুটি মামলা ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কার অভিযোগ সঠিক?

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এই প্রশ্নের সুরাহার করতে অপেক্ষা করতে হবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য। প্রতিবেদনে বোঝা যাবে, মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখনো বলার মতো কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি। কারণ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আমাদের হাতে আসেনি। তদন্তের স্বার্থে এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এইচএফ/জেবি)