কাজ চলে এসটিএসের বাইরে, দুর্গন্ধ-আবর্জনায় ভোগান্তি

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২১, ২১:৪৫ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ১৮:১৩

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

ময়লা বাছাইয়ের জন্য সেকেন্ডারি ট্রান্সফার সেন্টার (এসটিএস) থাকলেও এর মধ্যে কাজ হচ্ছে কম। বরং বেশি কাজ হচ্ছে এসটিএস-এর সামনের খালি জায়গায়। ফলে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ময়লা ধুয়ে চলে এসেছে সড়কে। ছড়িয়ে মাত্রাতিরিক্ত দুর্গন্ধ।

রাজধানীর হাজারীবাগের বউবাজার বেড়িবাঁধ পাড়ের এসটিএস-এর চিত্র এটি।

বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে তা নিয়ে আসা হয় স্থানীয় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার সেন্টারে (এসটিএস)। সেখানে বাছাই শেষে ময়লা পাঠানো হয় ভাগাড়ে। স্থানীয়ভাবে ময়লা বাছাইয়ের জন্য এসব এসটিএস গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত একটি করে এসটিএস গড়ে তোলার লক্ষ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। যাতে খোলা জায়গায় ময়লা না থাকে। অথচ এসটিএস থাকার পরে এর ভেতরে কাজ না করে বরং খোলা জায়গাতেই কাজ করছেন কর্মীরা।

স্থানীয়দের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে কাজ চলছে এসটিএসটিতে। বেড়িবাঁধ সড়ক এবং এসটিএস এর মধ্যেবর্তী ফাঁকা জায়গায় ময়লা বাছাই করার কারণে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. নবী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এদের কাজ করার কথা ওই ঘরটার (এসটিএস) মধ্যে। কিন্তু তারা কাজ করে বাইরে। দুর্গন্ধে চলাচল করা যায় না।’

একই অভিযোগ রিকশাচালক হামিদুল মিয়ার। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘এরা রাস্তার মধ্যে পর্যন্ত ময়লার গাড়ি রাইখা দেয়। পরিষ্কার করার বদলে উল্টা ময়লা করে। দেখেন পুরা জায়গাটার কি অবস্থা!’

এসটিএসটির সামনে অন্তত ৫০ গজ জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। ময়লার সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে সৃষ্টি করেছে এক অসহ্য পরিবেশ।

সংবাদকর্মীদের দেখে চলন্ত মোটরসাইকেল থামিয়ে এসটিএস কর্মীদের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন আশরাফুল ইসলাম। লালবাগ এলাকার এই বাসিন্দা প্রায়ই নিজের প্রয়োজন বেড়িবাঁধ সড়ক ব্যবহার করেন। কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধসহ সড়কের ময়লার পরে থাকার অভিযোগ করেন তিনি।

আশরাফুল বলেন, ‘এরা এসটিএস-এর ভেতরে কাজ না করে বাইরে করে। ময়লা বাইরে ফেলে রাখতে রাখতে তা রাস্তায় পর্যন্ত চলে আসে। পলিথিন আর ময়লা প্রায়ই বেড়িবাঁধে পড়ে থাকে। বৃষ্টিতে রাস্তা ভেজা থাকে, যে কোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এসটিএস-এর কর্মীরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

কর্মীরা বাইরে এসটিএস-এর বাইরে কাজ করেন এ বিষয়ে অবগত নন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। দক্ষিণ সিটির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিন্নাহ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসটিএস-এর বাইরে কাজ করার নিয়ম নেই। 

বাইরে কাজ করার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ জানিয়ে কাউন্সিলর জিন্নাহ আলী বলেন, ‘আমরা এসটিএস বানাইছি কি কারণে? আমরা এসটিএস বানাইছি ভেতরে ময়লার কাজ করার জন্য। যেহেতু বৃষ্টি বাদলের দিন অনেক সময় ভেতরে বেশি জায়গা থাকে না। অনেক সময় ট্রাকে মাল নিতে পারে না। গাড়ি নষ্ট হয়া থাকে। মালগুলো তো অন্যত্র ফালাইতে পারে না। আগে যেমন ওপেন জায়গা ছিল। সেখানে ময়লাগুলো ফেলত। এখন আমরা সেগুলোও বন্ধ করে দিয়েছি। কি কারণে তারা বাইরে কাজ করছে এটা দেখতে হবে। বাইরে কাজ করার তো নিয়ম নাই।’

এদিকে নিজেদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা বা অক্ষমতা যেটাই বলেন, আছে। আমাদের কিছু যান্ত্রিক সীমাবদ্ধতা আছে।’

এসটিএস-এর বাইরে কাজ করার বিষয়টি ‘অবশ্যই গ্রহণযোগ্য না’ উল্লেখ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/কারই/ইএস)