বাগেরহাটে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু
বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসনের দেয়া সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। বাগেরহাটের অভ্যন্তরীণ ১৬টি রুটে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরের দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ রয়েছে।
বিনা প্রয়োজনে যাতে মানুষ বাইরে ঘোরাঘুরি না করে এবং প্রশাসনের দেয়া বিধিনিষেধ যাতে সবাই মেনে চলে সেজন্য প্রশাসন মাঠে টহল দিচ্ছে। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এর আগে বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসন জেলাজুড়ে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই কঠোর বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
তবে এর মধ্যে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে আসা দেশি-বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ইপিজেডের সকল কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আজিজুর রহমান।
এছাড়াও প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্থানীয়দের কেনাকাটার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান ও জরুরি রোগী আনা-নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সসেবা চালু রয়েছে।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রাণের বাগেরহাটের চিফ অ্যাডমিন শাওন পারভেজ বলেন, বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে। এখানকার মানুষ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না, মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে এসে অযথা ঘুরাঘুরি করছে। যার কারণে সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বাগেরহাটের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম রাশেদুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করছি। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না তাদের জরিমানা করছি। আর যাদের মুখে মাস্ক নেই তাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছি। প্রতিদিন এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বাগেরহাট আন্ত:জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম মন্টু বলেন, জেলার ১৬টি অভ্যন্তরীণ রুটে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ প্রতিপালনে মালিক সমিতি প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে।
বাগেরহাট জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৩৬ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৭৫০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।
জেলা প্রশাসক আজিজুর রহমান বলেন, গত ১৫ দিন যাবৎ জেলায় করোনায় আক্রান্তের গড় হার ৪২ শতাংশ। কয়েকদিনে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, স্বাস্থ্যবিভাগ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। সবার কাছ থেকে যে তথ্যটি এসেছে তা হল, এখানকার মানুষ করোনার টেস্ট করতে চায় না। অনেকেই করোনা উপসর্গ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটি সবচেয়ে বিপদজ্জনক। (ঢাকাটাইমস/২৪জুন/পিএল)