অথচ অভিনয়ই ছাড়তে চেয়েছিলেন শাবনূর

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০২১, ১৫:১৬ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ১৫:২৫

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। ক্যারিয়ারে তিনিই সবচেয়ে বেশি দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। আবার একাধিক নায়কের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো জুটিও তার। সালমান শাহ থেকে শুরু করে রিয়াজ, ফেরদৌস কিংবা শাকিব খান- সবার সঙ্গেই ফিট শাবনূর। তার ঝুলিতে রয়েছে একটি জাতীয় পুরস্কার, ছয়টি বাচসাস পুরস্কার ও রেকর্ড ১০টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার।

অথচ এমন সফল একজন নায়িকা তার ক্যারিয়ারের শুরুতেই শুধুমাত্র হতাশার কারণে অভিনয় ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। বহুদিন আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শাবনূর নিজেই এ কথা জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পুরোনো সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও শেয়ার করেছেন বহু হিট ছবির এই নায়িকা। সেখানে তাকে অকপটেই কথাগুলো বলতে শোনা যায়।

১৯৯৩ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমাটি দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে শাবনূরের। তবে সেটি ফ্লপ হয়। ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। বিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ঠিক এই বিষয়েই প্রশ্ন করেন উপস্থাপিকা। শাবনূরের কাছে তিনি জানতে চান, ‘প্রথম সিনেমা ‘চাঁদনী রাতে’ ফ্লপ হাওয়ার পরও খুব কম সময়ে কীভাবে একজন সফল ও প্রতিষ্ঠিত নায়িকা হয়ে উঠলেন?’

উত্তরে শাবনূর বলেন, ‘আমার প্রথম ছবিটা ফ্লপ হওয়ায় খুব ভেঙে পড়েছিলাম। ছবিটবি আর করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন দাদু (এহতেশাম) আমাকে উৎসাহ দিলেন। আমার বাবা-মাও বললেন, প্রথমটা খারাপ গেছে তাতে কী হয়েছে। পরবর্তী যে ছবিগুলো তুমি সাইন করেছ, সেগুলো রিলিজ হোক, দেখো। তারপর পরবর্তী সিনেমা ‘দুনিয়ার বাদশাহ’ রিলিজ হলো। তখন সেটা মোটামুটি হিট করলো এবং আমার উৎসাহটা একটু বাড়ল।’

শাবনূর জানান, ‘এরপর ‘তুমি আমার’ ও ‘সুজন সখি’সহ আরও বেশকিছু সিনেমা মুক্তি পেল। এগুলোর একটাও ফ্লপ হয়নি। মোটামুটি হিট হয়। আর সেখান থেকেই উৎসাহটা আমার আরও বেড়ে যায় এবং আমি তখন থেকেই সিনেমা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। ’

সিনেমায় আসা প্রসঙ্গে শাবনূর ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ছোটবেলা অনেক নায়ক-নায়িকাদের দেখতাম পর্দায় গান করছেন, নাচ করছেন। তখন আমারও দেখে দেখে ইচ্ছা হলো, পর্দায় আমারও তাদের মতো হতে। কথায় কথায় আমার বাবা একদিন এহতেশাম দাদুকে (প্রয়াত পরিচালক এহতেশাম) বলেছিলেন, আমার মেয়ে চলচ্চিত্রে আসার ব্যাপারে আগ্রহী। উনি ছিলেন আমার বাবার বন্ধু। ওনারা একসঙ্গে মাছ মারতেন। দাদু বললেন, আপনার মেয়েকে একদিন নিয়ে আসেন। এরপর দাদু আমাকে প্রথম দেখেই বললেন, পেয়ে গেছি, তুমি আমার সিনেমার নায়িকা! সেদিন আমি একটা সবুজ শাড়ি পরেছিলাম।’

প্রসঙ্গত, শাবনূরের প্রকৃত নাম কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর। তার উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্র হলো- ‘রঙিন সুজন সখী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ ও ‘তোমাকে চাই’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘দুই নয়নের আলো’ ‘মন মানে না’, ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘বিয়ের ফুল’ ইত্যাদি। এই অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সিনেমাই ব্যবসাসফল।

তবে গত কয়েক বছর ধরে অভিনয়ে একেবারেই অনিয়মিত শাবনূর। ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তিনি অনিক মাহমুদকে বিয়ে করে সংসারী হন। স্বামীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার নাগরিকত্বও পান। বিয়ের পরের বছর ২৯ ডিসেম্বর নায়িকার কোলজুড়ে আসে ছেলে সন্তান আইজান নেহান। কিন্তু গত বছর অনিককে ডিভোর্স দেন শাবনূর। বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার তিনি একাই থাকেন।

ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এএইচ