প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে ‘আয়রনের ছ্যাকা’, ভাইসহ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফাহিম (১৩) নামে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আয়রনের ছ্যাকা ও মাটিতে আছড়ে দিয়ে মাথা থেতলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কালাদী দক্ষিণপাড়া এলাকার মাদ্রাসাই সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তাররা হলেন নরসিংদী জেলার মধাবদী থানার ময়শাদি এলাকার শাহ-পরান ও তার ভাই শাহজালাল।  

নির্যাতিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর নানা শহিদুল্লাহর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ১৯ জুন সকালে মাদ্রাসাশিক্ষক শাহ-পরান আয়রন দিয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ফাহিমের পশ্চাৎদেশ ও পিঠে ছ্যাকা দেয়। শুধু তাই নয় তার পা উপরের দিকে দিয়ে মাটিতে আছড়ে দিয়ে মাথা থেতলে দেয়। এসময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে নির্যাতনের বিষয়টি ফাহিমের সহপাঠীরা অধ্যক্ষ শাহজালালকে জানান। কিন্তু শিক্ষক শাহপরান অধ্যক্ষ শাহজালালের ভাই হওয়ায় তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চান। এ উদ্দেশে চিকিৎসার জন্য প্রতিবন্ধী ফাহিমকে মাদ্রাসা থেকে বের হতে না দিয়ে তিনি নিজেই ওষুধ এনে দেন। এছাড়াও নির্যাতনের বিষয়টি বাইরে না জানানোর জন্য মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখান তারা।  এর মধ্যে গত বুধবার ভোরে ফাহিম মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে ভর্তি করায়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে নানা শহিদুল্লাহ রূপগঞ্জ থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্ত দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহপরান ও শাহজালালের বিরুদ্ধে একাধিক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মসজিদে ও মাদ্রাসায় চাকরি করাকালীন নারী কেলেঙ্কারী ও শিশু নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত হয়। ওইসব ঘটনায় শাস্তি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে সাবেক সকল কর্মস্থল থেকে বিতারিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/পিএল)