সিটি করপোরেশনের নাম ভাঙিয়ে যাত্রী ছাউনিতে ব্যবসা

কৌশিক রায়, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জুন ২০২১, ১৮:৫১

বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি থাকলেও তা ব্যবহার করতে পারছেন না যাত্রীরা। যাত্রী ছাউনি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একটি যাত্রী ছাউনিতে বসেছে তিনটি দোকান। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনকে টাকা দিয়েই তারা সেখানে ব্যবসা করছেন। অথচ সিটি করপোরেশন বলছে ভিন্ন কথা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের ১২ নম্বর কলোনির দেয়াল ঘেঁষে অনেক বছর আগেই গড়ে তোলা হয়েছিল যাত্রী ছাউনিটি। বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা ছাউনিতে অপেক্ষা করতেন। রোদ, বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয় নিতেন যাত্রী ছাউনিতে। কিন্তু সম্প্রতি সে ছাউনি চলে গেছে ব্যবসায়ীদের দখলে।

উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত যাত্রী ছাউনিতে গড়ে তোলা হয়েছে একটি চায়ের দোকান। তার পাশে গড়ে উঠেছে কাঠ, বাঁশ, বেতের পণ্য বিক্রির দোকান। সম্প্রতি তার পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে মাটির তৈরি নানান পণ্য বিক্রির দোকান। পাশের নার্সারির মালামালও রাখা হয় ছাউনির মধ্যে। আর ছাউনি পেরিয়ে এসব মালামাল চলে এসেছে মূল ফুটপাতেও।

রোদ অথবা বৃষ্টিতে যাত্রী ছাউনিতে ঠাঁই হচ্ছে না সাধারণ মানুষের। হঠাৎ বৃষ্টি এলে যাত্রী ছাউনিতে স্থানে না পাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষকে।

যাত্রী ছাউনিতে হ্যান্ডিক্রাফটের দোকান দেয়া ব্যবসায়ীর নাম ফয়সাল হোসেন। ঢাকাটাইমসকে ফয়সাল বলেন, ‘কে বলেছে দোকান ভাড়া লাগে না? সরকারকে দোকান ভাড়া দেয়া লাগে।’

সরকারকে কীভাবে দোকানের ভাড়া দিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনকে ভাড়া দিতে হয়। এই বিল সরকারের হিসেবে জমা হয়। ভাড়া আদায়ের সময় আমাদের ভাড়া আদায়ের রশিদও দেয়া হয়। সিটি করপোরেশন সরকারের কাছ থেকে লিজ নেই তারপর সেগুলো ভাড়া দেয়। তবে ভাড়ার রশিদ দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি ওই ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সূত্র বলছে, সরকার বা সিটি করপোরেশন নয়, স্থানীয় নেতাদের ছায়াতলে ফুটপাতে দোকান গড়েছেন এই ব্যবসায়ীরা।

জানতে চাইলে উত্তর সিটির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গেলে কাউন্সিলরকে চাঁদাবাজের তকমা দেয়া হয়। সেই ভয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যেতে চান না তিনি।

শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, আমার মনে হয় না এসব দোকান বৈধ এবং সিটি করপোরেশনকে টাকা দেয়। আপনারা যেহেতু বলছেন, আমি যাত্রী ছাউনিটি খালি করার ব্যবস্থা করব।

করপোরেশনের অঞ্চল ৫ এর আওতাধীন জায়গাটির বিষয়ে অবগত আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন।

ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ছাউনিটি অনেক আগে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশন সেটি অনেক আগেই বাতিল করেছে। এখন যারা সেখানে আছে, তারা অবৈধভাবে বসে আছে।

মাসুদ হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে কাউন্সিলর নিজে উচ্ছেদ করেছে। হয়তো আবার বসছে। যদি বসে তাহলে আমাদের আবার উচ্ছেদ করতে হবে। আমরা আবার উচ্ছেদ করবো। যাত্রী ছাউনিতে কোন কিছুই করাই উচিত না। এখনতো করোনার কারণে উচ্ছেদ বন্ধ আছে। খুব শীঘ্রই আমরা এদের উচ্ছেদ করবো।’

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, সিটি করপোরেশন কোনো যাত্রী ছাউনি ভাড়া দেয়ার আইনগত সুযোগই নেই।

সেলিম রেজা বলেন, ‘যাত্রী ছাউনিতে দোকান দেয়া এবং সিটি করপোরেশনের ভাড়া তোলার কোন সুযোগই নাই। আমি বিষয়টা দেখছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ঢাকাটাইমস/২৪জুন/আরকে/কারই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :