আগে পণ্য, পরে দাম পাবে ইভ্যালি, আলেশা মার্টের মতো ই-কমার্স

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০২১, ২১:১৯ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ২৩:০৩

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ইভ্যালি, আলেশা মার্টসহ সকল ই-কমার্স থেকে কেনাকাটায় আগে পণ্য, তারপর দাম পাবে বিক্রেতা বা মার্চেন্টরা। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে একটি থার্ড-পার্টি কোম্পানি যারা ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পেমেন্ট স্থগিত রাখবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা’ বিষয়ক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডাব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান।

হাফিজুর রহমান জানান, গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার পর ডেলিভারি মেসেজ দিলে বিক্রেতা মূল্য পাবেন। আর এ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গেটওয়ের মাধ্যমে এই অর্থ লেনদেন হবে। তবে তার পরামর্শ, গ্রাহকেরা যেন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ বা নগদের মতো মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাকাটা করেন। তারা যেন আগাম নগদ অর্থ পরিশোধ না করেন।

গত ২০ জুন ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের পর বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শমী কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৪০৩.৮০ কোটি টাকা। যেখানে কোম্পানিটির চলতি সম্পদ মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৪ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত পণ্যমূল্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৩.৯৪ কোটি টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ করেনি ইভ্যালি। অন্যদিকে, ইভ্যলি যেসব কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কিনে ওই সব মার্চেন্টদের কাছে কোম্পানিটির বকেয়া ১৮৯.৮৫ কোটি টাকা। 
এমন প্রেক্ষিতে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক এবং লংকাবাংলা ইভ্যালিসহ দেশের ১০টি ই-কমার্স সাইটের সঙ্গে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করেছে। এগুলো হলো- ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, কিউকম, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট এবং নিডস।
শমী কায়সার বলেন, এক-দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা কারও কাম্য নয়। ভোক্তা ও বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থের জন্য এ খাতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা পরিচালন নির্দেশিকা দরকার। এ ছাড়া পেমেন্টের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি প্রয়োজন। নীতিমালা হওয়ার পর ডিজিটাল কমার্স আইনের দিকেও যেতে হবে।

ই-ভ্যালি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা বিপুল ছাড় দিয়ে লোকসানে পণ্য বিক্রি করছে। যে কারণে দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ভালো ও সৎ ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং ভবিষ্যতে এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ জুন/আরএ)