অনলাইন কেনাকাটায় পণ্য পাওয়ার আগে টাকা নয়

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০২১, ২২:৪৮ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ২৩:০৯

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
ঢাকাটাইমস
প্রতীকী ছবি।

এখন থেকে অনলাইন কেনাকাটায় পণ্য বুঝে পাওয়ার পর সব ই-কমার্সের টাকা পরিশোধ করবে গ্রাহক। গ্রাহকরা যেন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ বা নগদের মতো মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাকাটা করেন। গ্রাহক যেন পণ্য পাওয়ার আগে আগাম নগদ অর্থ পরিশোধ না করেন।

বৃহস্পতিবার ই-ভ্যালি ডটকম লিমিটেডসহ এই খাতের সার্বিক বিষয় নতুন করে খতিয়ে দেখতে বহুপক্ষীয় এক বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ই-ভ্যালির বিষয়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের পণ্য ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-ভ্যালির মতো অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া অবিশ্বাস্য অফারের বিষয়ে গ্রাহকদের সতর্ক থাকতেও পরামর্শ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের টাকা নিয়ন্ত্রণ করে পেমেন্ট গেটওয়ে নিশ্চিত করবে।

সম্প্রতি চার ব্যাংকসহ মোট পাঁচ প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ও আলেশা মার্টসহ ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয়ে কার্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওই ব্যাংকগুলো ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।

ব্যাংকগুলোর এমন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই গ্রাহকদের বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত এল। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা অন্য আটটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হলো ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপিং, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, কিউকম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডট কম বিডি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক-দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স খাত ক্ষতিগ্রস্ত সেটা কাম্য নয়। অনলাইনে কেনাকাটায় ক্রেতা-গ্রাহক উভয়ের স্বার্থে এ খাতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা পরিচালন নির্দেশিকা দরকার। এছাড়া পেমেন্টের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি প্রয়োজন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডব্লিউটিও সেল) মো. হাফিজুর রহমান জানান, ই-কমার্স বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। এখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার আগে কোনো পেমেন্ট হবে না। পণ্য বুঝে পাওয়ার পরেই টাকা পরিশোধ করবে গ্রাহক। এই নিয়ম দেশের সব ই-কমার্সের জন্য প্রযোজ্য হবে।

হাফিজুর রহমান বলেন, গ্রাহকরা যেন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ বা নগদের মতো মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাকাটা করেন। তারা যেন আগাম নগদ অর্থ পরিশোধ না করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুপারিশগুলো রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠানো হবে। তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।

অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে ই-ভ্যালির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি পরিদর্শন প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা বিপুল ছাড় দিয়ে লোকসানে পণ্য বিক্রি করছে। যে কারণে দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ভালো ও সৎভাবে ব্যবসা করা অন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থাও নষ্ট হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও বেসিসের প্রতিনিধিও ছিল।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/ডিএম)