আমরা কবে সচেতন হব?

মো. শাহিন রেজা
 | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২১, ২০:১৪

রাতে গ্রামে পুলিশের আগমন কারণ একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কিছুক্ষণ পর মসজিদের মাইকে ঘোষণা, আপনারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন। গ্রামে এক জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বাড়ির বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান করুন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রাম বাসিকে এ তথ্য জানানো হয়।

বেশ কিছু দিন ধরেই গ্রামে গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে মাইকিং করা হচ্ছে। কারণ করোনা সংক্রমণের হার আবার ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আক্রান্তের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেলেও মানুষ তেমন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলছে না। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধি পালনে এক ধরনের অনিহা দেখা যাচ্ছে মানুষের মাঝে। ফলে সরকার চাইলেও করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।

এছাড়াও বিভিন্ন কুসংস্কার ও বিভ্রান্তিমূলক ধর্মীয় বিশ্বাস স্বাস্থ্যবিধি মানার অন্তরায় হিসাবে কাজ করছে। বাংলাদেশের মধ্যে খুলনা বিভাগের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই বিভাগের অধিকাংশ জেলা ভারত সীমান্তবর্তী ফলে ভারতীয় করোনার ধরন খুব সহজেই সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে।

এই বিভাগেরই দুইটি সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুর ও জীবননগর। জীবননগর শহর থেকে পশ্চিমে ৪/৫ কি. মি. দূরে ভারতের বর্ডার। কিন্তু উপজেলা শহরের অধিকাংশ মানুষই মাস্ক বিহীন ঘুরাঘুরি করে। মহেশপুর উপজেলাতেও একই অবস্থা। শহরে ৫ টা পর্যন্ত বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার কথা। এ বিষয়ে পুলিশকে বেশ তৎপর দেখলাম কিন্তু স্বাস্থ্য বিধি মানতে তৎপর না আমরা! শুধুমাত্র পুলিশ প্রশাসনের একার পক্ষেই কি করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? আমরা যদি সচেতন না হয়?

গতকাল চুয়াডাঙ্গাতে করোনায় আক্রান্তের হার ছিল ৯৭ শতাংশ। এর পরও যদি আমরা সচেতন না হয় তবে কবে সচেতন হব? আজ থেকে কঠোর লকডাউন চলছে। গ্রামে, শহরের প্রবেশ মুখে পুলিশ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। চারিদিক থেকে খবর আচ্ছে পুলিশ প্রশাসন এবার খুব কঠোর ভূমিকা পালন করছে।

প্রতিদিন এমন কঠোর ভূমিকা নিলে খুব দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে। ফলে বিধি নিষেধ পালনে ঢিলেঢালা ভাব যেন পরিলক্ষিত না হয় সে দিকে প্রশাসনকে নজর রাখতে হবে। যেহেতু করোনার টিকার আওতায় এখনো সবাইকে আনা যায়নি তাই মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা ও সাবান পানি দিয়ে হাত ধোঁয়া এখন খুব বেশি জরুরি। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে কঠোরভাবে এই বিষয়গুলো তদারকি করতে হবে। উপজেলা প্রশাসন আরো কিছু উদ্যোগ নিতে পারে-

১। সীমান্তে বিজিবি'র টহল জোরদার করা। পুলিশের সাথে গ্রামের চৌকিদার ও দফাদারদের টহল কাজে নিয়োজিত করা। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে কাউকে বের হতে না দেয়া।

২। যেহেতু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাই উপজেলার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ফার্মেসিগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা। সম্ভব হলে প্রতিটা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা।

৩। প্রতিটা হাসপাতালে সব রকম সুযোগে সুবিধা নিশ্চিত করে করোনা উইনিট চালু করা। রোগীদের আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা। পর্যাপ্ত টেস্টের মাধ্যমে রোগী শনাক্ত করা।

৩। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে কঠোর হওয়া। কোনোভাবেই যেন বিধি নিষেধ কেউ ভঙ্গ করতে না পারে সে দিকে নজর রাখা।

৪। এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। জনসচেতনতা তৈরি করা।

লেখক: নাগরিক সাংবাদিক

ঢাকাটাইমস/২৬জুন/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

মুক্তমত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :