যাদুকাটা নদীতে দুই শিশু নিখোঁজ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় যাদুকাটা নদীতে স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া ছোট ভাইকে বাচাঁতে গিয়ে বড় ভাইও গত দুদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। তারা হলো- বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিন বাদাঘাট ইউনিয়নের মিয়ারচর গ্রামের সবজি বিক্রিতা মস্তোফা মিয়ার দুই ছেলে মেরাজুল ইসলাম (১০) ও খাইরুল ইসলাম (৬)। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিখোঁজ শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের মিয়ারচর গ্রামের বাজারে প্রতিদিনের মতো সবজি বিক্রি করছিল মস্তোফা মিয়া। বিকাল ৫টার দিকে মস্তোফা মিয়ার ছোট ছেলে খাইরুল বাজার সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর পশ্চিম দিকে ঘাটে বাদা নৌকায় উঠেছে দেখে বড় ছেলে মেরাজ তার বাবাকে জানায়। তখন খাইরুলকে নিয়ে আসতে বলেন বাবা মস্তোফা মিয়া।
বাবার কথামতো নদীতে গেলেও আর দুজনের কেউই ফিরে আসেনি। এর পর তাদের আসতে দেরি দেখে দোকান বন্ধ করে নদীতে গিয়ে আর কাউকেই খুঁজে পায়নি। আর কেউই দুই শিশুর বিষয়ে বলতেও পারছেন না। পরে বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করে। এরপর থেকে বিশ্বম্ভরপুর ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল নিউটন দাসের নেতৃত্বে শিশুদের উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
নিখোঁজ শিশুদের বাবা মস্তোফা মিয়া বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) গোলার পানিতে নদী একবারে বড়া ছিল। দোকানে এসময় বেচা-বিক্রি বেশি ছিল। এসময় ছোট পুলা (ছেলে) নৌকায় উইঠা পানি দেখতাছে বড় পুলা আইয়া বলে। পরে বড় পুলারে আবারও পাঠাই ছোট পুলারে আনতে।’
কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মেরাজুল ও খাইরুল দুজনই আর ফিরে না আসায় বাবা মস্তোফা মিয়া তাদের খুঁজতে নদীর পাড়ে যান। নদীর পাড়ে গিয়ে মেরাজুল ও খাইরুলকে দেখতে না পেয়ে বাড়ি ও আত্নীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেন। তবুও না পেয়ে বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশকে জানান।
মস্তোফা মিয়া বলেন, ‘মনে হয় আমার দুই পুলাই (ছেলেই) পানিতে পইরা (পড়ে) গেছে। পরে আজ (বুধবার) সকাল থেকে থানা পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের একটি দল যাদুকাটা নদীর মিয়ারচড় তাদের উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।’
দুটি শিশু নিখোঁজের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, যাদুকাটা নদীতে প্রবল স্রোতের মধ্যে খাইরুল ইসলাম (৬) ভেসে যাওয়ার সময় বড় ভাই মেরাজুল তাকে উদ্ধার করতে যায়। পরে সেও স্রোতের টানে ভেসে যায়। খবর পেয়েই আমরা সেখানে যাই। এখনও আমার দুটি শিশু উদ্ধারের চেষ্টা করছি।’
এ ব্যপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, ‘বিষয়টি জানানোর পর আমি সকালেই থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিবারের ভাষ্য মতে দুই শিশুই নদীর পানিতে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি দলের উদ্ধার অভিযান অব্যহত রয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/কেএম)