পথ ভুলে আসা শিশুটি থানায় থেকে যেতে চায়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২১, ১৯:৫২

বাড়ি থেকে বেরিয়ে পথ ভুলে উলিপুরে আসা শিশুটি থানায় থেকে যেতে চায়। স্নেহ-যত্ম ও আন্তরিকতায় যেন শিশুটি নিরাপদ স্থান খুঁজে পেয়েছে উলিপুর থানা পুলিশের মাঝে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পথচারীরা সুমাইয়া ওরফে রুমি (৭) নামে শিশুটিকে উলিপুর কৃষি ব্যাংকের বারান্দা থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে দেয়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা সদরে কৃষি ব্যাংকের বারান্দায় কান্নারত অবস্থায় একটি শিশুটি দেখতে পান পথচারীরা। এ সময় শিশুটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পথভুলে এখানে এসেছে বলে জানায়। তাদেরকে শিশুটি বলে, পাত্রখাতা গ্রামে তার বাড়ি। এরপর পথচারীরা শিশুটিকে থানা হেফাজতে দেন।

শুক্রবার বিকালে থানায় শিশুটির খোঁজ নিতে গেলে জানা যায়, চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামে শিশুটির বাড়ি। তারা দুই ভাই-বোন। ছোট ভাই কামরুল (৫)। তার বাবার নাম এরশাদুল হক ও মা কাজলী বেগম। শিশুটির মা-বাবা আলাদা হয়ে গেছেন প্রায় নয় মাস আগে। এরপর সুমাইয়া বাবার কাছে ও কামরুলকে মায়ের কাছে রেখে দেন। মা কাজলী বেগম ছোট সন্তান কামরুলকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সেখানে তিনি পোশাক শ্রমিকের কাজ করেন।

এরশাদুল হক মেয়ে সুমাইয়াকে ছোট ভাই দিনমজুর মমিনুলের কাছে রেখে জীবিকা নির্বাহের জন্য চট্রগ্রামে চলে যান। সেখানে তিনি রিকশা চালান। সুমাইয়া ওরফে রুমির সঙ্গে কথা হলে সে বলে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এখানে চলে আসে। সে থানা পুলিশের স্নেহ যত্ম ও আন্তরিকতায় খুব খুশি। বাড়ির থেকে এখানে খুব আনন্দে আছে বলে জানায় সে । এখানেই থেকে যেতে চায়।

পুলিশ জানায়, শিশুটি পথ ভুলে পায়ে হেঁটে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে উলিপুরে চলে আসে। এরপর শিশুটির কথা অনুযায়ী তার বাবা-মার খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে তার বাবা-মা কেউ বাড়িতে নেই। তার চাচা ও মামাদের খবর দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, থানায় নারী ও শিশু ডেক্সের তত্ত্বাবধানে থাকা শিশুটি থানায় থেকে যেতে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা কিছুটা বিপাকে পড়েছি। সে তার বাড়িতে ফিরে যেতে চায় না। পুলিশ এখন প্রকৃত পক্ষে জনগনের বন্ধু, আতঙ্ক নয়। এ কারণে শিশুটিও বুঝতে পেরেছে স্নেহ ও যত্ম ও নির্ভরতার স্থান এখন পুলিশ। এ কারণে শিশুটি তার নিজের স্বজনের চেয়েও পুলিশের উপর আস্থা রাখছেন।

ওসি বলেন, শিশুটির অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। যেহেতু বাবা-মা সেপারেট তাই চাচা ও মামাদের সঙ্গে কথা বলে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অভিভাবকদের কাছে শিশুটিকে তুলে দেয়া হবে। তা সম্ভব না হলে সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সেফ হোমে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :