কোরবানির গরু বিক্রি নিয়ে হতাশায় চিরিরবন্দরের খামারিরা

মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)
 | প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২১, ১০:৫১

শতাধিকের বেশি গরু নিয়ে মোটাতাজা করেছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের বাকালীপাড়া গ্রামের খামারি আলম হোসেন। আশা, এবার কোরবানির ঈদে গরু বেচে খামারকে আরো বড় করবেন। কিন্তু সর্বাত্মক লকডাউনে বেশি দাম পাওয়া দূরে থাক, সবগুলো গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা, সেই শঙ্কায় আছেন তিনি।

তার মতো দুশ্চিন্তায় আছেন উপজেলার অনেক খামারিই। তাদের আশঙ্কা, করোনা মহামারীর কারণে মানুষ এবারও পশু কোরবানি কম দেবে। এতে হাটে পশু বিক্রি কম হবে, যার প্রভাব পড়বে গরুর দামে। অন্যদিকে, ঈদে পশু বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও খরচ কিন্তু থেমে নেই খামারিদের। বেড়েই চলেছে পশুখাদ্যের খরচ। গরুর খাবারের মূল্য বৃদ্ধি এবং ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় হতাশায় আছেন তারা।

খামারি আলম বলেন, ‘গরুর ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। গরুকে প্রতিদিন খাবার হিসেবে খৈল, ভুসি কুঁড়ো ও কাঁচা ঘাস দিতে হয়। এতে একটি গরুর পেছনে দিনে খরচ পড়ে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এরই মধ্যে মোট ১০০টি গরুর পেছনে প্রায় আট লাখ ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। দাম না পেলে বড় লোকসান হবে। আর যদি এবার বিক্রি না হয়, তাহলে প্রতিদিন যে খরচ হয় তাতে সীমাহীন ক্ষতি হবে।

খামারিরা আরো বলছেন, প্রতিবছর কোরবানির হাট শুরু মাস দেড়েক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারিরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরু কেনেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার আগ্রহী কোনো ব্যাপারীর দেখা নেই। এছাড়া কোরবানির আগমুহূর্তে জমজমাট হাট বসার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।

আব্দুল ইউনিয়নের খামারি শাহীনুর ইসলাম বলেন, ছয় মাস আগে এক বস্তা গমের ভুসির দাম ছিল এক হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৩০০ টাকা। আগে যে খৈলের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি, করোনাকালে তা কিনতে হচ্ছে ৩৮-৪২ টাকা দরে। শুধু গমের ভুসি ও খৈল না, সব রকম গো-খাদ্যের দাম গড়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। গরু খাবারের দাম বাড়ায় এবং ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ার হতাশায় রয়েছি।

ঈদের আর মাত্র ১৬ দিন বাকি। ব্যবসা করতে না পারায় আক্ষেপ আছে ব্যাপারীদের মধ্যেও। গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সারা বছরই আমরা গরু কেনা-বেচার মধ্যে থাকি। কোরবানির আগের কিছুদিন সব থেকে বেশি ব্যবসা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই মাস ধরে নিয়মিত হাট বসতে পারছে না। আর কোরবানির আগমুহূর্তে হাট বসার সম্ভাবনা খুবই কম।

এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সরফরাজ হোসেন বলেন, এবারের ঈদে চিরিরবন্দর উপজেলায় ২১ হাজার ২৫২টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ১২ হাজার ৯২৯টি, মহিষ-ছাগল আট হাজার ৮১টি এবং ভেড়া ২৪২টি। করোনার কারণে সর্বাত্মক লকডাউন থাকায় অনলাইনে গরু বেচা-কেনার জন্য ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি আমরা।

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :