ব্যাংকের বারান্দায় কাঁদছিল মেয়েটি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৮

ঢাকায় অবস্থানরত মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য তিনদিন আগে গত বৃহস্পতিবার চাচার বাড়ি ছেড়ে বের হয়েছিল আট বছরের শিশু সুমাইয়া ওরফে রুমি। ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে আসে সে। দিশা না পেয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক শাখার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিল।

পরে পথচারীরা শিশুটিকে উলিপুর থানা হেফাজতে রেখে আসে। এই কদিন ছিল থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কের তত্ত্বাবধানে। রুমির বাবা এরশাদুল হক থাকেন চট্টগামে। মেয়ের খোঁজ নেন না বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অবশেষে রবিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকায় গার্মেন্টেসে কর্মরত রুমির মা কাজলী বেগমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তার সম্মতিতে রুমিকে মামা সফিকুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে, এই কদিনে তার প্রতি মায়া জন্মে গেছে পুলিশ সদস্যদের। তাইতো যাওয়ার সময় থানার পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে নগদ কিছু অর্থ এবং জামাকাপড় কিনে দিয়ে রুমিকে বিদায় জানিয়েছেন পুলিশ । শুধু তাই নয়, থানার মোবাইল নম্বর দিয়ে বলা হয়েছে, যে কোনো সমস্যা হলে রুমি যেন কল করে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামের চাচার বাড়ি থেকে বের হয় রুমি। পায়ে হেঁটে এবং অটোরিকশায় চড়ে ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে আসে সে। দিশা না পেয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক শাখার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। তার কান্না শুনে পথচারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার মায়ের কাছে যাবে বলে জানায়। সে তার চাচার নামসহ ঠিকানা বলতে পারছিল। পরে পথচারীরা তাকে উলিপুর থানা হেফাজতে পৌঁছে দেয়।

রুমি এবং তার স্বজনরা জানায়, এরশাদুল হক ও কাজলী বেগম দম্পতির দুসন্তান সুমাইয়া ওরফে রুমি এবং কামরুল (৬) । নয় মাস হলো তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মেয়েকে তার বাবার কাছে রেখে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য ঢাকায় চলে যান কাজলী। এদিকে এরশাদুল তার ছোট ভাই দিনমজুর মমিনুলের কাছে কন্যা রুমিকে রেখে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে এরশাদুল রিকশা চালায়। কন্যার কোনো খোঁজখবর নিতেন না। ফলে চাচার বাড়িতে ভালো না থাকায় মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল রুমি।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, রুমির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তার চাচা ও মামাসহ অন্যান্য স্বজনদের খবর পাঠানো হয়। রবিবার রাতে তার মামা ও মামি থানায় আসেন। এসময় অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবদুল আজিজ আকন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর মা কাজলী বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তার সম্মতিতে মামা সফিকুল ইসলামের কাছে রুমিকে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। থানায় থাকাকালীন রুমির সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করেন এএসআই আসমাউল হুসনা।

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :