কমলগঞ্জ হাসপাতালে খসে পড়ছে পলেস্তারা, আতঙ্কে রোগী-স্বাস্থ্যকর্মী

রমজান আলী, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
| আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২১, ১৩:৪৯ | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২১, ১২:০২

তিন বছর আগে শয্যা সংখ্যা ৩১ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। এ জন্য ৮ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৩তলা নতুন একটি ভবন। কিন্তু তিন বছর যেতে না যেতেই তিন তলা ভবনটির শতাধিক জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাঁটল। সংস্কার করা পুরনো ভবনটির ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে দায়িত্ব পালন করা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকেন আতঙ্কে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ৫০ বছর পর ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হয়। এজন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কাজটির বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ এন্ড এসসি। শুরু থেকেই কাজের গুণগত মাননিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কিন্তু ঠিকাদার সরকার দলের সাবেক ছাত্রনেতা হওয়ায় সংশ্লিষ্টরাসহ স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখাননি। কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন তৎকালিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তবে ভবন উদ্বোধনের ৩ বছরের মাথায় ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার পিলার, বিমসহ দেয়ালে ছোট-বড় প্রায় ১০০ ফাটল দেখা দিয়েছে।

সোমবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফাটলগুলোর কারণে ডাক্তার, নার্সসহ আগত রোগীরা আতঙ্কে মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবণে যে সংস্কার কাজ করা হয়েছিলো তাও প্রায় খসে পড়ছে। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতার কক্ষ, পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কক্ষ, জরুরি বিভাগ ও রোগীদের থাকার ওয়ার্ডের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া জানান, যে সময় এই ভবণে কাজ হয়েছিলো সেসময় তিনি এখানে কর্মরত ছিলেন না। ভবণের ফাটলে বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সিলেট বিভাগ উচ্চ ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়ায় যেকোনো সময় ভবন ধসে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়টি অবগত হয়েছি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ফাটল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভবন উদ্ভোধনকালে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী) শফিকুর রহমানের সাথে মঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নতুন ভবনের কাজটি যখন শুরু হয় তখন তিনি ছিলেন না। কাজ শেষ হওয়ার ২ মাস আগে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তার ভাষ্য, বিম ও কলামে ফাটলের কথা নয়। কর্মকর্তারা বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করলে ফাটলের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

(ঢাকাটাইমস/৬ জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :