ত্রিশালে ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি, আগ্রহ নেই করোনা পরীক্ষায়

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২১, ১৮:০০

জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌর এলাকা ও ১২টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের মানুষ। এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সীরা। এই অবস্থায় তাদের মধ্যে ভয় থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই।

এদিকে তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেই এ সময় সর্দি-জ্বর বেড়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তবে করোনা মহামারির এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

এদিকে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবনে কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি কেউ। দুর্বল শরীরে জ্বর নিয়েও অনেকে বাজারঘাটসহ জনসমাগমের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টিকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় থাকলেও ঝামেলা ও বিড়ম্বনার ভয়ে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। তাই রোগীরা দ্বারস্থ হচ্ছেন স্থানীয় বাজারের পল্লী চিকিৎসকদের। তাদের অনেকেই পল্লী চিকিৎসকের দেয়া ওষুধে ভালো হচ্ছেন বলে হাসপাতালের দ্বারস্থ হচ্ছেন না। আবার অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালে বহির্বিভাগ।

এদিকে বাজারের ফার্মেসিগুলোতেও কদর বেড়েছে বিভিন্ন কোম্পানির প্যারাসিটামল জাতীয় নাপা, নাপা-এক্সটা, হিস্টামিন ও দামী অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের। ফলে তাদের ব্যবসাও বেশ জমজমাট। অনেকেই আবার হাসপাতালে যেতে চাইলেও লকডাউনের কারণে যেতে পারছেন না।

বিভিন্ন বাজারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওষুধের দোকানিদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন বলে অনেকেই ওষুধ নিচ্ছেন। অনেককে স্বাভাবিক ওষুধ দিয়ে দিয়ে উন্নতি না হলে দামী অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়েছেন। এতে করে বেচা-কেনাও বেশ ভালো হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রোগী বলেন, হাসপাতালে গেলেই করোনা টেস্ট দিবে। তাই ভয়েই যাই না। এজন্য কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই গ্রামের পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ এনে খাচ্ছি। দেখি কী হয়। অনেকেরই কমছে। না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নেব।

ত্রিশাল উপজেলার চার থেকে পাঁচটি ওষুধের দোকানের বিক্রেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়। তারা জানান, সর্দি-কাশি-জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে গেছে। মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, বর্তমান সময়ে এলাকায় সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে বেশিরভাগ ফার্মেসিতে গিয়ে সমস্যার কথা বলে ওষুধ কিনে নিচ্ছে। ফলে সর্দি, কাশি ও জ্বর সংশ্লিষ্ট ওষুধের চাহিদা বেড়েছে।

এদিকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ত্রিশাল উপজেলায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৭০ জনের শরীরে এবং মারা গেছেন তিনজন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, ত্রিশালে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। করোনার ভয়ে অনেকেই নমুনা দিচ্ছে না। নমুনা দিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের পরিমাণ আরও বাড়বে।

এ ব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে এবং অসুস্থদের করোনা টেস্টের আওতায় আনতে উৎসাহিত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/এসএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :