এক সপ্তাহে কুড়িগ্রামের ৪ শতাধিক পরিবার তিস্তায় বিলীন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৪

উজানে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে আটটি পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে নদীর করাল গ্রাসে গৃহহীন হয়েছে চার শতাধিক পরিবার। বিলীন হয়েছে শতশত বিঘা আবাদি জমি, গাছপালা, জলাশয়, পুকুরসহ দুটি মসজিদ। ভাঙনকবলিতরা আশ্রয় নিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান, থেতরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার জানান, তিস্তা সেতু থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার পর‌্যন্ত উন্মুক্ত জায়গায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এতে আটটি পয়েন্ট চিহ্নিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন শুরু করেছে। ফলে গত এক সপ্তাহে জেলার রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চার শতাধিক পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করেছে। বর্তমানে প্রচণ্ড ভাঙন দেখা দিয়েছে উলিপুরের থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াই পিয়ার ও বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা এলাকায়।

এছাড়াও রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম, সরিষাবাড়ি ও খিতাব খাঁ গ্রামে প্রচন্ড ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদিও এই তিন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এর আপার সাইডে আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত পাঁচ দিনে থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াই পিয়ার গ্রামে ৬১টি ভাঙন কবলিত পরিবারকে উলিপুর উপাজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-জান্নাত রুমি জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে থেতরাইয়ের গোড়াই পিয়ার গ্রামে ম্যাচাকার ভাঙনে ৬১ ঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিতদের সরকার থেকে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙন রোধে আমরা বিভিন্ন স্থানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব স্থাপন করে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নদী গতিপথ পরিবর্তন করে নতুনভাবে আবার ভাঙন শুরু করেছে। এ ব্যাপারে আমরা একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। সেটি অনুমোদন হলে তিস্তা নদী তীরবর্তী মানুষ ভাঙন ও বন্যার কবল থেকে রেহাই পাবে।

বুধবার সকালে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে এসে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সাংসদ অধ্যাপক এমএ মতিন জানান, এটা একটা সাময়িক ব্যবস্থা। তিস্তার ভাঙন রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এই জনপদের মানুষের আর্থিক, সামাজিক সবক্ষেত্রেই পরিবর্তন ঘটবে। উলিপুরে এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। মানুষের দুর্ভোগে প্রশাসন তাদের পাশে আছে। আমরাও খোঁজখবর নিচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :