ঠাকুরগাঁওয়ে ঘরে ঘরে করোনা, হাসপাতাল থেকে ছড়ানোর ভয় বেশি

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনের নজীরবিহীন কঠোর তৎপরতার মধ্যে লকডাউন চললেও ঠাকুরগাঁওয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা নেই। ঘরে ঘরে করোনা উপসর্গের রোগী থাকলেও সেই বিষয়ে কেনো বিকার নেই কারও। এর মধ্যে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা হাসপাতাল থেকেই সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সিভিল সার্জনের অফিস সূত্র মতে, জেলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৬০৬ জন। আর মারা গেছেন ১০৪ জন।

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল ঘুরে রোগী, তাদের স্বজন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালে করোনা পজিটিভ রোগীর চিকিৎসার জন্য রয়েছে নির্ধারিত করোনা ইউনিট। সাধারণ ওয়ার্ডে পজিটিভ রোগী ভর্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে তারপরও দেখা গেছে, গত চার দিন ধরে পুরুষ ওয়ার্ড রয়েছে করোনা পজিটিভ রোগী।

এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার রোগী মাত্র ভর্তি হয়েছে। এসে শুনি পাশের বেডে করোনা পজিটিভ রোগী। এতে আমার বাবা যদি আক্রান্ত নাও হয়ে থাকেন তাহলে এখন করোনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

করোনা রোগীদের বিভিন্ন টেস্টের জন্য প্যাথলজি বিভাগ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় আলাদা করা হয়েছে। এখানেই রোগীদের সব পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু এখনো বেশির ভাগ রোগী বাইরে থেকে বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে আনছেন। এছাড়া বাইরে থেকে পোর্টেবল এক্সরে মেশিন দিয়ে অনেক রোগীর এক্সরে করানো হয়।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, করোনা রোগীর জন্য যেসব ওষুধ প্রয়োজন তা মেডিসিন কোম্পানির প্রতিনিধিরা স্বাস্থ্য গাইড লাইন ভেঙে সরাসরি রোগীদের কাছে সরবরাহ করছেন। এছাড়া পজিটিভ রোগীর সঙ্গে যারা আছেন তারা বিভিন্ন কাজে বের হচ্ছেন আবার হাসপাতালে ফিরছেন। এজন্যও সংক্রমণ দ্রুত ঠাকুরগাঁও জেলায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এছড়া লকডাউনের মধ্যেও মানুষ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে। রাস্তায় বেরোলে খুব একটা বোঝার উপায় নেই যে লকডাউন চলছে।

সাদেক নামে একজন বলেন, রাস্তায় দেখতে এসেছি কেমন লকডাউন হচ্ছে। শফিকুল ইসলাম নামে অন্য একজন বলেন, ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না, তাই একটু রাস্তা থেকে ঘুরে যাচ্ছি।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: রাকিবুল ইসলাম বলেন, করোনা ইউনিটে স্বজনদের অন্য ওয়ার্ডে যেতে বারন করা হয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে করোনা মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহাফুজার রহমান বলেন, করোনা হাসপাতালের সামনে মানুষের ঘোরাঘুরি বন্ধে অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে। তার পরও অনেকেই নিয়ম মানতে চায় না। প্রয়োজনে আমরা আরো কঠোর হব।

(ঢাকাটাইমস/৯ জুলাই/পিএল)