ফারুকীর ‘লেডিস্ এন্ড জেন্টলম্যান’ সহজ সরল গল্পের জটিল পরিণতি!

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২১, ২০:০১

রুহেল বিন ছায়েদ

বলে রাখি, এই গল্প কিংবা কাহিনী নিজে দেখে তারপর এটিকে জাজ করতে হবে, অন্যের রিভিউয়ের উপর কোনোকিছুই নির্ভর করবে না। অর্থাৎ এটি এমন একটি কাজ যেটি একেকজনের কাছে একেক রকম মনে হবে। 'কারও বেশি ভালো লাগবে, কারও আবার কম ভালো লাগবে' টাইপ গল্প, একেবারে খারাপ লাগার মতো কাজ এটি নয়।

প্রথম ৪ পর্ব দেখে আপনার মনে হবে এটা আবার কি এমন 'বিশেষ' কিছু? তবে আমার কাছে এই চিরাচরিত গল্পের এই উপস্থাপনটাই দারুণ লেগেছে। ফারিনের এক্সপ্রেশনের সাথে আফজাল হোসেনের অভিনয় রীতিমতো 'সোনায় সোহাগা' টাইপ। শেষের দিকে গল্প  টেনে বড় করা হয়েছে এবং আমার কাছে বেশ কিছু জায়গা উপভোগ্য যেমন মনে হয়েছে তেমন কিছু জায়গা বিরক্তিকরও লেগেছে। অর্থাৎ শেষটা আরও স্মুথ হতে পারতো।

অভিনয়ের হিসেব করলে আফজাল হোসেনের ধারেকাছেও কেউ নাই। কেন তিনি কিংবদন্তি তা প্রমাণ করেছেন প্রতিটা সিনে। তাসনিয়া ফারিনকে ভালোই লেগেছে দেখতে। কয়েকটি দৃশ্যে তো একেবারে চমকে দেয়ার মতো অভিনয় ছিল এই সম্ভাবনাময়ীর। কিন্তু কিছু দৃশ্যে তাকে কেমন যেন 'তিশা তিশা' টাইপ লাগছিলো আবার তিশার মতো হচ্ছিলোও না! তবে এ কাজ তার জন্যও নিশ্চিতভাবে মাইলফলক ছিল, প্রমাণ করেছে নিজেকে নতুনকরে।

হাসান মাসুদের অভিনয় কোনো সময়ই ভালো না। এই সিরিজে ভালো চরিত্র পেলেও তার অভিনয়ে বিশেষত্ব কিছু পেলাম না। প্রথমদিকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হলেও ফারিনের স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করা লোকটির চরিত্র শেষ দিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রথম দিকে ভালো না লাগলেও তার অভিনয় ক্যারেক্টার অনুযায়ী 'ঠিকঠাক' লেগেছে শেষ দিকে এসে। উনার নামটা জানা নাই।

মামুনুর রশীদ শক্তিমান অভিনেতা। কিন্তু সত্যি বলতে এই সিরিজে তার অভিনয় দেখানোর সুযগোই ছিলো কম। একই কথা পার্থ বড়ুয়া, ইরেশ জাকেরের বেলায়। ক্যারেক্টার অনুযায়ী যা'ই দিয়েছেন ঠিকঠাক। তবে আরও ভালো ব্যবহার করা যেত এদেরকে। এই গল্পে সবচেয়ে রোবটিক অভিনয় করেছেনে 'মারিয়া নুর'! অভিনয় নয়,  ডায়লগ ডেলিভারিতে মনে হচ্ছিলো তিনি উপস্থাপনা করছেন। যদিও এই ক্যারেক্টারে তিনি অনেক কিছু দেখানোর সুযোগ ছিল। সাবেরি আলম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুকিত জাকারিয়া অপ্রধান চরিত্র এবং তেমন মনে রাখার মতো কিছু করেননি। নাদের চৌধুরীর অভিনয় খুবই ন্যাচারাল ছিল।

মেকিং খুব ভালো। ক্যামেরার কাজ দুর্দান্ত ছিল। বিজিএমও ভালো। কিছু ক্ষেত্রে সাউন্ডের সাথে ঠোঁটের অমিল লক্ষ্য করলাম। হয়তো তাড়াহুড়ার ফল। মেকিং নিয়ে কোনও কথা নাই তবে মনে রাখার মতো সংলাপ ক'টি আছে? ফারিনের সাথে তার বাবার কিছু দৃশ্যে স্মরণীয় কিছু সংলাপ আছে। আর খুব বেশি নাই। বরং কিছু উদ্ভট সংলাপ পেয়েছি কিছু কিছু সিনে। চঞ্চল চৌধুরীর আগমন ও তার সাথে হাসান মাসুদের পুরো সিনটাই 'অপ্রয়োজনীয়' লেগেছে! অতএবঃ ওভারল গল্প ভালো,  তবে আহামরি কিছু না। অবশ্যই দেখার মতো কাজ তবে ফারুকীর সেরা কাজের একটি না।

লেখক: শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তা

ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/এসকেএস