সংসারে আলো আনতে গিয়ে নিজেই নিভে গেল ছোট্ট হাসনাইন

ইকরামুল আলম, ভোলা
 | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০২১, ১১:৩৯

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিন মজুর ফজলুর রহমান। অন্যের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অসুস্থতার কারণে কাজ করতে না পেরে এক বছর ধরে ঘরেই বসে আছেন। সংসারে নেমে আসে ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের অন্ধকার। এই অবস্থায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া একমাত্র ছেলে মো. হাসনাইনকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সজীব কোম্পানির সেমাই কারখানায় কাজে দেন। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় হাসনাইনও সহজভাবে কাজে আসে, যদি সংসারের অন্ধকার একটু হলেও দূর হয়! কিন্তু কারখানার ভয়াবহ আগুনে নিখোঁজ অনেকে মধ্যে আছে সেও। হয়তো শনাক্ত না হওয়া পোড়া হাড় মাংসের একটি তারই!

ফজলুর রহমান জানান, হাসনাইন স্থানীয় কবি মোজাম্মেল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। আশা ছিলো ছেলে লেখাপড়া করে বড় হয়ে একজন শিক্ষিত মানুষ হবে। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তিনি নিজেও এক বছর ধরে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত যাওয়ায় কোনো কাজ করতে পারে না। তাই স্থানীয় মোতালেবের সাথে তার ১১ বছর বয়সী শিশুপুত্রকে নারায়নগঞ্জে কাজে পাঠান। সেখানে তার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রাকিবও কাজ করতো।

ফজলুর রহমান অনেকটাই নিশ্চিত অন্য অনেকের মতো তার ছেলেও পুড়ে কয়লা হয়েছে হাসেম ফুডের কারখানায়। কিন্তু তবুও খোঁজ মেলেনি চবলে এখনও আশা করেন ছেলে তার ফিরলেও ফিরতে পারে!

তবে ভয়াবহ এই আগুনে চরফ্যাশন উপজেলার যে সাত শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে তাদের কেউ হয়তো আর বেঁচে নেই বলেই মনে করছে ফায়ার সার্ভিস ও রূপগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসন।

হাসনাইন ছাড়াও ওই ঘটনায় আরও নিখোঁজ আছে উপজেলার রিকশাচালক কবির হোসেনের ছেলে রাকিব (২২), জিন্নাগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দাসকান্দি এলাকার আবু তাহেরের মেয়ের জামাই শাকিল (২৩), চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তাজউদ্দিনের ছেলে রাকিব (১৮), দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফখরুল ইসলামের ছেলে শামিম (১৮), ওমরপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জনতা বাজার এলাকার গোলাম হোসেন মাঝির ছেলে মহিউদ্দিন (২৫)।

(ঢাকাটাইমস/১১ জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :