জিন নয়, জলবায়ুর কারণে মানুষ লম্বা-বেটে হয়!

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১৬:১২ | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০২১, ১৫:৪৫

আধুনিক যুগে মানুষের বিবর্তন শুধু জিনের ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং জেনেটিক রূপান্তরের চেয়ে জলবায়ু মানব বিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব পড়ে মানুষের শরীরে।

নতুন গবেষণায় জানা গেছে, মানবদেহের আকার-প্রকারে এই পরিবর্তনের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও জার্মানির টুবিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই নতুন ধাঁচের গবেষণাটি করেছেন। গবেষণাটি 'নেচার কমিউনিকশনস' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় তারা 'হোমোজেনাস' গোত্রের তিনশোরও বেশি ফসিল থেকে দেহ ও মস্তিষ্কের আকার নিরূপণের চেষ্টা করেছেন। এবং এসব তথ্য কয়েক লাখ বছরের পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের গতিবিধির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন। এসব ফসিল যখন জীবিত মানুষ ছিল, তখন তারা কী ধরনের জলবায়ুতে বেঁচে ছিল, তা বের করারও চেষ্টা করেছেন।

সম্প্রতি মানবদেহের বিভিন্ন আকারের ৩০০ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কঙ্কাল হাজির করেছিলেন তারা। যেখানে আদিম থেকে আধুনিক মানুষের মাথার খুলিও ছিল। গবেষকরা দাবি করেন, মাথার খুলি ও হাড়গুলো দেখে তৎকালীন সময়ের জলবায়ু সম্পর্কে একটা বিশেষ ধারণা পাওয়া যায়।

গবেষকরা বলছেন, বিশেষ করে তাপমাত্রার সঙ্গে মানুষের আকারের হেরফের নির্ভর করে। তাদের গবেষণা অনুযায়ী। অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ার মানুষগুলো আকারে বড় হয়েছিল এবং গরম আবহাওয়ার মানুষের আকার ক্রমেই ছোট হয়ে এসেছে।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আন্দ্রে মনিকা একজন প্রাণীবিদ্যাবিদ। তিনিই এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদেহী হলে শীতল আবহাওয়া থেকে বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। মানুষ যত লম্বা হয়, তত তার শরীর কম বিস্তৃত হয়, আর তার ফলে আরও কার্যকরভাবে তাপ শুষে নিতে পারে। তিনি বলেন, এ ধরনের ব্যাপার অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। তবে এখন জানা যাচ্ছে, কয়েক লক্ষ বছর ধরে মানবদেহের আকৃতির পরিবর্তনের পেছনে জলবায়ুই বড় ভূমিকা রেখেছে।

গবেষণাটিতে মস্তিষ্কের আকারের উপরও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে কাজ করেছেন গবেষকরা। তাঁরা দেখেছেন, অন্তত তিন লাখ বছর আগে আফ্রিকায় 'হোমোসেপিয়েন্সে'র উদ্ভব। কিন্তু 'হোমোজেনাসে'র অস্তিত্ব ছিল আরও আগে। এই হোমোজেনাসের মধ্যে 'নিয়ান্ডারথালস' , 'হোমো হাবিলিস' ও 'হোমো ইরেকটাস' রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হোমো হাবিলিসের মতো আগের প্রজাতিগুলোর তুলনায় হোমোসেপিয়েন্সের মস্তিষ্ক ৫০ শতাংশ ভারী ও তিন গুণ বড়। কিন্তু এই পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে এখনও নানা মতবাদ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা