নিমতলী ট্রাজেডি

কোনও মামলা হয়নি, জিডির তদন্ত বিষয়ে জানে না পুলিশ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২১, ১১:২৮ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২১, ১১:৫৬

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস

পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ১২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা তদন্ত ধামাচাপা পড়ে গেছে। এগারো বছর আগে ওই ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল। তবে সেটির তদন্ত বিষয়ে আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। এমনকি বংশাল থানায় হওয়া সেই জিডির কপিও থানায় মেলেনি। যদিও ওই ঘটনার পর সরকারের করা তদন্ত কমিটির সঙ্গে জিডির তদন্ত সমন্বয় করা হয়েছিল বলেই পুলিশের ভাষ্য।

২০১০ সালের ৩ জুন রাতে পুরান ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরার ৪৩ নম্বর বাড়ির নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ এই আগুন প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সেই জ্বলন্ত আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছিল ১২৪টি তাজাপ্রাণ। এই ঘটনা নাড়া দিয়েছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মনেও। এতিম হয়ে যাওয়া তিন কন্যার দায়িত্বও নেন তিনি।

সরেজমিন দেখা গেছে, পুরান ঢাকার ৪৩ নবাব কাটরার আগুনে পোড়া সেই পাঁচতলা ভবনটি সংস্কার করা হয়েছে এবং বর্তমানে লোকজন বসবাসও করছেন। এছাড়া ওই ভবনের পাশে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সময় আগুনে পুড়ে যাওয়া উল্টো দিকের দ্বিতল ভবনটিও বিধ্বস্ত হয়েছিল। ওই ভবনের বাসিন্দা ফরিদউদ্দিনসহ ১১ জন নিহত হন। পরবর্তীতে এই ভবনটি সংস্কার করা হলেও এখন সেখানে কেউ বাস করেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যে বাড়ির নিচতলার রাসায়নিকের গুদাম থেকে আগুন লেগেছিল, সেই বাড়ির মালিক হাজি গুলজার আলী এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। প্রথমে কিছুদিন তারা এলাকায় ছিলেন না, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে তারা ফিরে আসেন। এ ঘটনায় তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয়নি। তিনি বলেন, নিমতলীর ঘটনায় মামলা ও বিচার হলে চুড়িহাট্টা ট্রাজেডি এবং সবশেষ রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় এভাবে আগুনে পুড়ে শ্রমিকদের মরতে হতো না।

নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের সময় বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছিলেন আবুল হাসান। তিনি এখন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। তিনি দুপুরে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ওই ঘটনায় সরকার একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। তখন ওই কমিটির সঙ্গে পুলিশের তদন্ত সমন্বয় করা হয়েছে।

থানা থেকে জিডির কপি নিখোঁজ

বংশাল থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিমতলীর ঘটনায় হওয়া জিডির সূত্র ধরে ১২৪ জনের মরদেহ ঢাকা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। আগুনের ঘটনায় করা সেই জিডির কপি এখন থানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জিডির বিষয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা টাইমসকে এ বিষয়ে জানতে বংশাল থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ১১ বছর আগের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারবো না।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/ডিএম)