যেসব খাবার খেলে হৃদরোগ দূরে থাকে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২১, ১২:৪৪

হৃদপিণ্ড সচল থাকবে যতদিন, মানুষ সুস্থ থাকবে ততদিন। হৃদযন্ত্রের কোনও সমস্যা দেখা দেবে, তখনই ধেয়ে আসবে বিপদ। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ হার্টের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দিন দিন এ রোগ প্রবল আকার ধারণ করছে। কারণ দুঃশ্চিন্তা, উত্তেজনা, উশৃঙ্খল জীবনযাপন ইত্যাদি। এক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১৭.৯ মিলিয়ন মানুষ হার্টের অসুখে মারা যান। তাই হৃদরোগকে বিশ্বের একনম্বর ঘাতক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের লাইফস্টাইলে অনেক পরিবর্তনের ফলে হার্টেরও অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ওজন বাড়ছে। কোলেস্টেরল বাড়ছে। আর উপরি পাওনা হিসেবে স্ট্রেস তো আছেই। আর তাই এমন খাওয়ার খেতে হবে যাতে ফাইবার থাকবে বেশি পরিমাণে। সেই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকবে। শুধু খাওয়া নয়, নজর দিতে হবে শরীরচর্চাতেও। তাই হার্ট সুস্থ রাখতে ডায়েটে যে পরিবর্তন আনবেন-

আঁশযুক্ত খাবার খান

যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ আছে সেসব খাবার খাবেন। এসব খাবারের কারণে শরীরে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে এই ব্যাকটেরিয়া। বেশি আঁশ আছে এরকম সবজির মধ্যে রয়েছে শিম ও মটরশুঁটি জাতীয় সবজি, কলাই ও ডাল জাতীয় শস্য এবং ফলমূল। পুষ্টি বিজ্ঞানীরা বলছেন, আলু এবং শেকড় জাতীয় সবজি খোসাসহ রান্না করলে সেগুলো থেকেও প্রচুর আঁশ পাওয়া যায়। এছাড়াও তারা হোলগ্রেইন আটার রুটি এবং বাদামী চাল খাবারও পরামর্শ দিয়েছেন।

চর্বি জাতীয় খাবার কমিয়ে ফেলুন

খাদ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেসব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। চিজ, দই, লাল মাংস, মাখন, কেক, বিস্কিট ও নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে হলে স্যাচুরেটেড নয় এমন চর্বি (যেসব খাবারের উপর চর্বি জমাট বাঁধে না) সে ধরনের খাবার খেতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে, তেল সমৃদ্ধ মাছ, বাদাম ও বীজ। অলিভ, রেপসিড, সানফ্লাওয়ার, কর্ন এবং ওয়ালনাট তেল দিয়ে রান্নার বিষয়ে তারা জোর দিয়েছেন।

দুধের বেলায় স্কিমড বা সেমি-স্কিমড (দুধ থেকে চর্বি সরিয়ে নেওয়া) দুধ খেতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে খাবারে যাতে বাইরে থেকে চিনি মেশানো না থাকে। লাল মাংসের বদলে খেতে হবে মুরগির মাংস। মুরগির চামড়া তুলে ফেলে দিন। গরুর মাংস খেলে তার উপর থেকে চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে।

লবণকে বিদায় জানান

লবণ বেশি খেলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এর ফলে বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও। ব্রিটেনে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয় যে এনএইচএস থেকে তাদের পরামর্শ হলো দিনে সর্বোচ্চ ৬ গ্রাম (এক চা চামচের পরিমাণ) লবণ খাওয়া যেতে পারে।

ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খান

যেসব খাবারে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বেশি থাকে সেগুলো আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজ উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে। হৃদরোগের যেসব কারণ আছে সেগুলো ঠেকাতেও এসব খনিজ ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

কার্বোহাইড্রেট বাদ দিন

হার্ট সুস্থ রাখতে তালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিতেই হবে। কারণ কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলে হার্টে কোলেস্টেরল জমতে পারে। আর তাই প্রোটিন কিংবা প্রয়োজনীয় ফ্যাটও অবশ্যই রাখুন খাদ্য তালিকায়। সেই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইড, রক্তচাপ এসবও রাখুন নিয়ন্ত্রণে। শাকসবজি, ফল, বাদাম, নানা রকম বীজ এসব খান। তেল একেবারেই খাবেন না।

বেশি মোটা হলে ক্যালরি কমিয়ে দিন

হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেওয়ার জন্য উপরের চারটি ধাপ অনুসরণ করলেই আপনি অনেক দূর অগ্রসর হয়েছেন। কারণ আপনি যদি চিনি, লবণ, স্যাচুরেটেড চর্বিযুক্ত খাবার কম খান, ভিটামিন ও মিনারেল আছে এরকম খাবার বেশি খান তাহলে আবার মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম। ওজন যাতে বেড়ে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

এছাড়া কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী এক খাবার হলো ডার্ক চকোলেট। সব সময় যারা ডার্ক চকোলেট (৭০ শতাংশ কোকোয়া সমৃদ্ধ) খান, তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এতে যে পলিফেনল উপদান থাকে, তা রক্তচাপ কমায়।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :