করোনায় মানবিক জেলা প্রশাসক একজন জিয়াউল হক

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৬:২৭

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে বগুড়া জেলা প্রশাসন। কঠোর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের প্রতিনিয়ত খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসন থেকে। এছাড়া কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রতিদিন প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটগণের নেতৃত্বে শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও টহল চলমান আছে। তারা প্রতিদিন লকডাউনের বিধি নিষেধ অমান্যকারীদের জরিমানা করছেন, ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

এক মাস আগেও বগুড়ায় করোনার সংক্রমণ ছিলো অনেক কম। মৃত্যু ছিল না বললেই চলে। হঠাৎ করেই বগুড়ার আশপাশের জেলাগুলোতে ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়্যান্ট করোনা ভাইরাস সংক্রমিত করে। এরপর ওই জেলাগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেল্টা ভেরিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

এমন পরিস্থিতিতে ১৯ জুন রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে জেলা প্রশাসন বগুড়া পৌরসভা ও সদর উপজেলার জনসাধারণের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। পাশাপাশি শহরের বাজারগুলো ফাঁকা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়।

এছাড়া চলতি লকডাউন কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত শহরে টহল চলমান আছে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে।

লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন জরিমানা করছেন। ১ জুলাই থে‌কে ৮ জুলাই পর্যন্ত লকডাউ‌নের বি‌ধি নি‌ষেধ না মানায় জেলায় ১হাজার ৪৩ টি মামলা হ‌য়ে‌ছে। এই সংখ‌্যক মামলায় অর্থদন্ড করা হ‌য়ে‌ছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৯২০ টাকা।

এদিকে, চলতি লকডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অসহায় কেউ ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন দিলেই তার কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। চলতি লকডাউনে এখন পর্যন্ত বগুড়া জেলার ৭ হাজার ৯২০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৩ তে ফোন দিয়ে খাদ্য সহায়তা পেয়েছেন ৮৯৩ জন। এর মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ২১০ জন এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে ৬৮৩ জন অসহায় ব্যক্তিকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এই ব্যক্তিদের অধিকাংশই মধ্য এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে ৭ হাজার ২৭ জনকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৩ শ পরিবার এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে ৬ হাজার ৭২৭ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্তদের যারা সুস্থ হয়েছেন এমন ৭২ ব্যক্তির মাঝে ১০ হাজার করে অনুদান প্রদান করা হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে। এছাড়া এমন ২৯৫ জন ব্যক্তিকে ৫ হাজার করে টাকা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, বগুড়ার আশেপাশের জেলাগুলোতে যখন করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করে সে সময় আমরা বগুড়া পৌরসভা এবং সদর উপজেলায় বিধিনিষেধ আরোপ করি। সেটি ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ ছিল। এরপর তো পুরো দেশেই কঠোর বিধিনিষেধ দেয়া হলো। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। পাশাপাশি সেনাবাহিনী বিজিবি পুলিশও কাজ করছে।

তিনি আরো বলেন, বগুড়াতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে তবে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের হার ৫০% পর্যন্ত যায়নি। যেটা আপনারা অন্য জেলায় দেখতে পারবেন। বগুড়াতে একদিন সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। প্রতিদিন ২৭-৩০ শতাংশের মাঝেই সীমাবদ্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করছি লোকজনকে ঘরে রাখার। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষিত মানুষগুলোও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছে। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :