এবার খোলা জায়গায়ও ঈদের জামাত পড়া যাবে

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৭ | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১, ১৯:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করার পর ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত তিনটি ঈদে খোলা জায়গায় জামাত পড়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হলেও এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে ঈদগাহ, খোলা জায়গা ও মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

গত বছর মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণের পর ইতিমধ্যে তিনটি ঈদে খোলা জায়গার পরিবর্তে মসজিদে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ৩০ জুন ও ৫ জুলাই কতিপয় বিধি-নিষেধ আরোপ করে নির্দেশনা জারি করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বর্তমান কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিম্নবর্ণিত শর্তসাপেক্ষে ১৪৪২ হিজরি/২০২১ সালের পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের জামাত আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’   

ক. করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর স্থানীয় পরিস্থিতি ও মুসল্লিদের জীবন-ঝুঁকি বিবেচনা করে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে যথোপযুক্ত বিবেচিত হলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক ঈদুল আজহার জামাত মসজিদ, ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।  

খ. মসজিদে ঈদের নামাজ আয়োজনের ক্ষেত্রে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।

গ. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে মসজিদ/ঈদগাহে আসতে হবে। ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।

ঘ. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মসজিদ/ঈদগাহে ওজুর স্থানে সাবান, পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

ঙ. মসজিদ/ঈদগাহের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান ও পানি রাখতে হবে।

চ. ঈদের নামাজের জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

ছ. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর দাঁড়াতে হবে।

জ. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করা হলো।

ঝ. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

ঞ. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করতে হবে।

ট. করোনা মহামারির এ বৈশ্বিক মহাবিপদ হতে রক্ষা পেতে বেশি বেশি তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ ও কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে এবং আমাদের কৃত অন্যায়-অপরাধের জন্য ঈদের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

ঠ. খতিব, ইমাম, মসজিদ/ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক নির্দেশনাগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

২। উল্লিখিত নির্দেশনা লংঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

করোনার সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকার গত ১ জুলাই থেকে প্রথমে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৪ জুলাই পর্যন্ত।

এর মধ্যে ঈদে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এবং পশু কেনাকাটা করার সুযোগ দিতে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবার ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আসছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/বিইউ/জেবি)