করোনাকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতি

জি এম কিবরিয়া
 | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৬:৩৬

হঠাৎ করেই সূর্য যেন ঢেকে গেলো কালো অধ্যায়ে। দিনটি ছিল ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯। চীনে করোনাভাইরাসের অশুভ সূচনা হলো। কথার কাঁদা ছুড়াছুড়ি শুরু হয়ে গেল বিশ্বময়। বাংলাদেশেও শুনলাম মুসলমানদের এই রোগ হয়না! উন্নত দেশগুলো বর্ডার সিলগালা করলেও তারা চতুর করোনাকে আটকাতে পারেনি।

৮ মার্চ ২০২০, করোনার ঢেউ এসে আছড়ে পড়লো বাংলাদেশে। দেশে প্রথম রোগী সনাক্ত হলো। ডব্লিউএইচও ১১ মার্চ ২০২০ তারিখে বিশ্বব্যাপি মহামারি ঘোষনা করলেন। মার্চের শেষের দিকে বাংলাদেশ সরকার দেশে ছুটি ও লকডাউন ঘোষণা করলো। মনে হয়, এই প্রথম গ্লোবাল ভিলেজ একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। নামান্তরে, বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত হলো।

বাংলাদেশ কি সেই বিপর্যয়ের বাইরে?

না। নিম্নআয়ের মানুষের দুর্বিষহ জীবন শুরু হলো। আমরা আত্মীয়স্বজনের হারাতে থাকলাম। তবে আশার কথা হলো, দেশের উদিয়মান অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খেতে খেতেও যেন কোনও রকমে বেঁচে গেল! কিভাবে? কোন অলৌকিকতায়?

না অলৌকিকতায় নয়! বরং এদেশের মানুষের লৌকিক পরিশ্রম ও সঠিক সিদ্ধান্তই বাঁচিয়ে দিয়েছে আমাদের অর্থনীতিকে। আর এদেশের কৃষক বাঁচিয়ে দিয়েছে দেশকে একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের হাত থেকে। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রধান কয়েকটি সূচক নিয়েই মূলত আলোচনা করতে চাই। যেমন:

জিডিপির প্রবৃদ্ধি: ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.১৫ শতাংশ অর্জিত হলেও এ বছর (২০২০-২১) প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৫.২৪ শতাংশ। সাধারণ দৃষ্টিতে এই অর্জন সন্তোষজনক না হলেও বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে এটি ছিল একটি বড় অর্জন। আইএমএফ এর তথ্য মতে, ২০২০ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হিসাবে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে, যা ছিল আবার এশিয়ার মধ্যে প্রথম অবস্থানে।

জাতীয় আয়: এ সময় মাথাপিছু জাতীয় আয় হয়েছে ২,০৬৪ ডলার (সূত্র: অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২০);

রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড: করোনাকালীন সময়ে প্রবাসীদের মধ্যে অন্যরকম সাড়া দেখা গেল। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২,৪৭৭ কোটি ডলার, যা গত বছর থেকে ৩৬.১০ শতাংশ বেশি (সূত্র: ইটিভি, জুলাই ৫, ২০২১)। খুশির কথা হলো, বর্তমানে রেমিট্যান্স প্রবাহে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেকর্ড: গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে রিজার্ভের রেকর্ড ছিল ৪৫ বিলিয়ন ডলার। একটি রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড তৈরি যেন এই খাতে নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৫.৪৬ বিলিয়ন ডলার (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর, ১৯ জুন, ২০২১)।

এই সফলতায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের (সূত্র: দৈনিক জনকন্ঠ, মে ২৭, ২০২১) মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, এরকম মহামারিতেও বাংলাদেশ কোন বৈদেশিক ঋণের কিস্তি প্রদানে বিলম্ব করেনি। এতে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং ইনডেক্স বৃদ্ধি পাবে।

বোরো ধান উৎপাদনে নতুন রেকর্ড: চলতি বছরে বোরো ধান উৎপাদনে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। এবার বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫০৮ টন, এটি যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড, যা গত বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি (সূত্র: জাগো নিউজ, জুন ১৬, ২০২১)।

আনন্দের কথা হলো, সামষ্টিক অর্থনীতির এরূপ অনেক সূচক রয়েছে যাতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। কারা এই অগ্রগতির নায়ক?

ভোক্তাশ্রেণির কারিশমা: করোনার প্রথম ধাক্কায় যখন সারা বিশ্ব দরজা বন্ধ করে দিল, তখন এদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে এদেশের বিপুল সংখ্যক জনগন। কিভাবে? দ্রব্য ক্রয়ের মাধ্যমে।

আপনারা জানেন, ইতোমধ্যেই দেশে একটি ভোক্তাশ্রেণি তৈরি হয়ে গেছে। বিগত দশকে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা ২.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে (সূত্র: প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯), যা বাংলাদেশের সক্ষমতার আরেকটি জ্বলন্ত উদাহরণ। সমালোচকেরা বলেন, ভারতের অর্থনীতিকে টেনে রেখেছে ঐ দেশের জনগণের অধিক সঞ্চয় প্রবনতা (প্রায় ৩২ শতাংশ)।

বাংলাদেশীদের ‘খরচে-হাত’ নিয়ে কলকাতার বাবুদের ঈর্ষা বা সমালোচনা আমি নিজেই প্রত্যক্ষ করেছি। অথচ এই খরচে হাতই আমাদের অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে করোনার প্রথম ধাক্কা থেকে। তাছাড়াও জনগণ ব্যক্তিগত ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে খাদ্য দ্রব্য দরিদ্র মানুষকে বিতরণ করেছে, যা মানবিক বিপর্যয় আটকে দিয়েছে।

অপরদিকে, সরকারের ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা বাজারে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি করেছে। ফলে অর্থনীতি প্রথম ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়নি, আমরা দাড়িয়েই ছিলাম। অধিকন্তু, সামান্য হলেও বাংলাদেশ করোনাকালীন সহায়তা নিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

কৃষকের কেরামতি: করোনায় অনিশ্চিতায় বিশ্বময় খাদ্য মজুদের প্রবণতায় বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) আশঙ্কা করেছিল যে, বাংলাদেশেসহ জনবহুল বা তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে তীব্র খাদ্য সঙ্কট বা দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে!

কিন্তু এদেশের নায়ক কৃষকেরা (কৃষিতে নিয়োজিত ৪০.৬ শতাংশ মানুষ) একটি বড় ধরনের কেরামতি দেখালেন। তারা বোরো ধান উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এই ভূ-খন্ডের বিপুল সংখ্যক জনগণকে চিন্তামুক্ত করলেন।

শুধু কি তাই? জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সর্বশেষ তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ১৩টি খাতে বিশ্বের শীর্ষ দশ এর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে (সূত্র: প্রথম আলো, মার্চ ২৭, ২০২১)।

এর মধ্যে কৃষিখাতে কমপক্ষে দশটি খাতে ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ; যেমন বিশ্বে বাংলাদেশ: ধান উৎপাদনে- চতুর্থ; ইলিশ উৎপাদনে - প্রথম; মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে- তৃতীয়; পাট উৎপাদনে - দ্বিতীয় (রপ্তানিতে- প্রথম); সবজী উৎপাদনে - তৃতীয়; আলু উৎপাদনে - ৬ষ্ঠ; কাঁঠাল উৎপাদনে- দ্বিতীয়; আম উৎপাদনে- অষ্টম; পেয়ারা উৎপাদনে- অষ্টম এবং ছাগলের দুধ উৎপাদনে- দ্বিতীয়।

তাছাড়া তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিতে দ্বিতীয় এবং আউট সোর্সিং কাজে দ্বিতীয় অবস্থান বাংলাদেশের অগ্রগতির ইঙ্গিতকেই বেগবান করে।

অদম্য কর্মজীবী ও শ্রমিক:

প্রথম লকডাউনেই দেখা গেল এদেশের মানুষ কতটা কর্ম-পাগল! তারা কাজ করতে চায়। লকডাউনের মধ্যেও গার্মেন্টসে যোগদানের জন্য শত মাইল পায়ে হেটে মানুষ রওয়ানা হয়ে গেল ঢাকার উদ্দেশ্যে। ফেরিঘাট গুলোতে উপচে পড়া ভিড় কি উৎপাদনশীল জাতির ইঙ্গিত বহন করে না? (যদিও ঐ সময়, স্বাস্থ্য বিধি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ছিল, স্বাস্থ্য বিধি সম্পূর্ণ উপেক্ষিত ছিল)। তখন সরকার প্রধানের বিচক্ষণতায় স্বল্প পরিসরে লকডাউন খুলে দিয়ে সরকার দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিল।

করোনাকালীন বড় বাজেট:

করোনাকালীন সময়ে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা সরকারের সাহসিকতার পরিচয় বহন করে। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা এবং ১০ হাজার কোটি টাকার করোনাকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতিতে মানি সার্কোলেশন বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে।

করোনাকালীন অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ:

মহামারি মোকাবেলা করা: করোনাকালীন অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই মহামারিকে বিচক্ষণতার সাথে মোকাবেলা করা। যদিও স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বড় ধরনের সমালোচনা আছে, তবুও বাংলাদেশ চমৎকার ভাবে করোনার দু'টি ঢেউ মোকাবেলা করেতে সক্ষম হয়েছে।

আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে প্রথম দুটি ঢেউয়ে এদেশে মৃত্যু হার তুলনামূলক কম ছিল। কিন্তু সব অর্জন ধুলোর সাথে মিশে যাবে যদি তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা না যায়। অর্থাৎ যদি এদেশে ভারতের মতো বিপর্যয় নেমে আসে। তাই দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।

গণটিকা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন: ভারতে তীব্র মহামারি দেখা দিলে বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত টিকা বন্ধ করে দেয় ভারত। ফলে গণটিকা কর্মসূচিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় স্বল্প সময়ে টিকা সংগ্রহ আশার আলো দেখাচ্ছে।

এখন চ্যালেঞ্জ হলো, দ্রুত গণটিকা কর্মসূচির গতি বেগবান করে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ জনগণকে টিকা প্রদানের মাধ্যমেই বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া যে, বাংলাদেশ করোনামুক্ত। এতে বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশ লাভজনক অবস্থায় থাকবে এবং দেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আরও বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা ও দুর্নীতি মুক্ত করা: দেশে শত শত বড় প্রকল্পের পাশাপাশি হাজার হাজার ছোট প্রকল্পও চলমান আছে। এই প্রকল্প গুলোর সঠিক বাস্তবায়ন এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ভুক্ত এবং ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের কাতারে।

সম্প্রতি মুজিব বর্ষের গৃহায়ণ প্রকল্পে কিছু কিছু এলাকায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি ব্যবহারের অভিযোগসহ আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক সমালোচনা চলছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারি দুর্নীতিবাজদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলা: বিশেষজ্ঞ মহল থেকে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে । সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। কিন্তু জনগণের অসচেতনতা ও উদাসীনতা তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলার একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে মনে করছি।

এসময় সেনা বাহিনীকে মাঠে নামানো হলো সরকারের একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য বিষয়ক টাস্কফোর্স এর মতামতের ভিত্তিতে এই চলমান লকডাউন আরও এক দুই সপ্তাহের জন্য বৃদ্ধি করে তা কঠোর ভাবে পরিপালণ করতে হবে। যদিও তাতে জনগণের কষ্ট হয়, তবুও দেশের বৃহত্তম স্বার্থে সাময়িক অসুবিধা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, ১৬.৬ কোটি জনসংখ্যার দেশ এই বাংলাদেশ। আমরা যখন স্কুল কলেজের ছাত্র ছিলাম, তখন পরীক্ষার খাতায় লিখতাম, বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা জনসংখ্যা। সেই সমস্যা আজ সম্ভাবনা হিসাবে দেখা দিয়েছে। এটা কম কিসের! আজ আমাদের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর, স্বাক্ষরতার হার (৭+) ৭৪.৪ শতাংশ (সূত্র: অর্থনৈতিক সমীক্ষা -২০২০)।

এ বছর বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা ধরা করা হয়েছে ৭.২ শতাংশ, যা অর্জন মোটেও কঠিন হবে না; যদি আমরা বৈশ্বিক শত্রু করোনাকে সঠিক ভাবে মোকাবেলা করতে পারি।

এই নিবন্ধ যখন লিখছি তখনও প্রতিদিন গড় মৃত্যু ২০০ জনের অধিক। হাসপাতাল গুলোতে ঠাঁই নেই। এবারে বেশি বিপর্যস্ত সীমান্তবর্তী জেলা গুলো। বাংলাদেশে চলছে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের ভয়াল ছোবল। কেবল আমার আপনার সচেতনতাই পারে এই বিপদ থেকে আমাদের দেশকে মুক্তি দিতে।

লেখক: ক্লিন এন্ড গ্রিন ফাউন্ডেশন এবং গরিব ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :