মাকে নির্যাতন থেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল কিশোরের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮:১০

কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে মাকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবেশীর লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল জাহিদ হাসান (১৮) নামে এক কিশোরের। পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবেশী কাজল খান কাশেম (৩০) গাছের ঢাল দিয়ে জাহিদের মা ও ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিল ছলিমা খাতুনকে (৪৮) রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছিলেন।

এ সময় ছলিমার ছেলে জাহিদ হাসান মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়। এসময় তার রক্তনালীর টিউমারে আঘাত লাগে। পরে মা ও ছেলেকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহিদ হাসান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কাচিচর এলাকার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর ছলিমা বেগমের কাছে বুধবার সকালে এক মা ও তার মেয়ে ত্রাণের জন্য আসে। এ সময় বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় কাউন্সিলরের সঙ্গে ত্রাণের তালিকা নিয়ে ওই দুই মহিলার বাক-বিতণ্ডা হয়। এই রাস্তা নিয়ে প্রতিবেশী কাজল খান কাশেমের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল কাউন্সিলর ছলিমার।

চিৎকার শুনে কাজল খান কাশেম মনে করেন তাদেরকে উদ্দেশ করে কাউন্সিলর চিৎকার করছেন। এই ভেবে বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি ইউক্যালিপ্টাস গাছের ডাল ভেঙে তিনি ছলিমাকে পেটাতে শুরু করেন। এ সময় ছলিমা মাটিতে পরে গেলে তার প্রতিবন্ধী ছেলে জাহিদ হাসান মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে তাকেও বেদম মারপিট করা হয়। এসময় জাহিদের মাথায় ও চোখের উপর বেড়ে ওঠা টিউমারে আঘাত লেগে ফেটে যায়।

পরে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহিদ মারা যায়। ঘটনার পরপরই কুড়িগ্রাম সদর থানার একটি টিম অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত কাজল খান কাশেমকে দুপুরের দিকে গ্রেপ্তার করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় নিয়ে আসে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, ছেলেটি বিরল হেমাঙ্গজিওমা রোগে ভুগছিল। এটা রক্তনালীর টিউমার। টিউমারে আঘাত লাগায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) উৎপল কুমার রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে আসামি কাজল খান কাশেমকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/এসএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :