দৌলতদিয়ায় পদ্মার তীব্র ভাঙন: নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতঘর

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮:৪৬ | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮:৪৪

দৌলতদিয়ায় হঠাৎ পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। চোখের পলকে ১৫টি ঘর নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেল। ৪০টি ঘর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিতে প্রায় ২০০ ঘর। আতঙ্কে রয়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাট এবং বাস টার্মিনাল। দক্ষিণ পশ্চিঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ঘাটে এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ভাঙন কবলিত ও এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার ঝড়ো বাতাসে সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ পদ্মানদীর ভাঙন শুরু হয় কিছু বুঝে উঠার আগে ১৫টি বসতঘর নদীর বুকে চলে যায়। ঘর থেকে কেউ কিছু বের করতেও পারেনি। এ সময় প্রায় ৪০টি স্বপ্নের বসতঘর সরিয়ে নিয়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে ১০/১২টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়।

নদী ভাঙন কবলিত পল্লী চিকিৎসক বেনজীর আহমেদ বিলাস বেপারী বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দোকানে আসি। দোকান থেকে সংবাদ পেলাম নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বাড়িতে যাওয়ার আগেই বাড়ি বিলীন হয়ে গেল নদীগর্ভে।

তিনি আক্ষেপ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আর কখনও বাড়িতে যেতে পারবো না। এবার দিয়ে তিন বার নদী ভাঙনের শিকার হলাম। প্রতিবার ঘর-দরজা নিয়ে আসতে পারি। এবার কিছু আনতে পারি নাই। এখন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় বসবাস করবো।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার উজ্জল হোসেন বাবু বলেন, শেষ, আমার সব শেষ। এখন দাঁড়ানোর মতো কোনো জায়গা নেই আমার। এতগুলো মানুষ নিয়ে কোথায় দাঁড়াবো। সর্বনাশা নদী আমার সব কিছু শেষ করে নিয়েছে। বাড়ি থেকেও কিছু বের করতে পারি নাই।

তিনি দুঃখ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা শুকনো মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধ করলে আজ আমরা এতগুলো মানুষ গৃহহীন হতাম না।

হাউ-মাউ করে কান্না জড়িত ভাষায় আক্কাস বেপারী বলেন, লকডাউনের কারণে আয়-রোজগার বন্ধ। এখন বাড়ি চলে গেল নদীতে। আমাদের মতো গরীব মানুষের কী হবে। আমরা কোথায় যাবো।

ভাঙন কবলিত বদিউজ্জামান টোকন বলেন, বুধবার হঠাৎ ১০টি বাড়ি চলে গেল নদীতে। ৩০টি বাড়ি সরিয়ে নিয়ে গেল। এখন ভাঙন আতঙ্কে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও বাস টার্মিনাল।

তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিরোধ না করলে যেকোন সময় দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও বাস টার্মিনাল। ভেঙে যেতে পারে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। বন্ধ হয়ে যেতে পারে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান মামুন জানান, হঠাৎ নদী ভাঙনের কারণে কয়েকটি পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের সংবাদ শুনতে পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের জরুরি ভিত্তিতে কিছু খাদ্য সহযোগিতা করা হবে। পর্যায়ক্রমে তাদের বসবাসের জন্য ঘর তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি জানান, জরুরিভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে দৌলতদিয়া ঘাট মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। সুতরাং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করি ঘাট রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/এসএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :