১৬ জুলাই জাতির আরেকটি কলঙ্কিত দিন

মাহবুবউল আলম হানিফ
 | প্রকাশিত : ১৬ জুলাই ২০২১, ১৪:৪৬

দেশে জরুরি অবস্থা চলাকালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে।

সেদিন ভোরে সেনা সমর্থিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ধানমন্ডির সুধাসদন থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকটি মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখান থেকে শেখ হাসিনাকে সরাসরি জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে স্থাপিত সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু কেন এই গ্রেপ্তার?

এবার একটু পেছনে ফেরা যাক। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট সরকার সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নির্যাতন ও লুটপাটের মাধ্যমে নরকে পরিণত করেছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে। গ্রেনেড, বুলেট, বোমায় শেষ করতে চেয়েছিল গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকেই সমূলে নিশ্চিহ্ন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নে বিভোর ছিল বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়া। বিএনপি জামাতের সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং দুঃশাসনে জনগণ ফুঁসে উঠেছি বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে। জনরোষে ভীত হয়ে বিএনপি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার নীল নকশা আটে। জাল বিস্তার করে প্রহসনের নির্বাচনের। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তীব্র গণআন্দোলনের মুখে বানচাল হয়ে যায় এই ষড়যন্ত্রের নির্বাচন।

এই সুযোগে সামরিক নেতৃত্বের সহায়তায় ক্ষমতা গ্রহণ করে তথাকথিত সুশীলদের ব্যানারে এক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রচিত হয় কলঙ্কজনক ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারোর পটভূমি। মাইনাস টু ফর্মূলার নামে মূলত মাইনাস ওয়ান তথা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মরিয়া ওঠে এরা। সেই নীল নকশারই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেষ পর্যন্ত দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে জামিনে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। প্রায় ১১ মাস কারাবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন জামিনে মুক্তি পান তিনি।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। শুরু হয় নতুন বাংলাদেশের পথচলা। উন্নয়ন অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। চরম দরিদ্র দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এবং গণতন্ত্র এক ও অভিন্ন সত্তা। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। শেখ হাসিনা অর্জন আর বিজয়ের ঠিকানা। তিনি রাষ্ট্রনায়ক থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব, সততা, যোগ্যতা ও কর্মগুণে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির আশা আকাঙক্ষা এবং আস্থার ঠিকানা।

শতায়ু হোন বঙ্গবন্ধু কন্যা- এটাই দোয়া ও প্রত্যাশা।

লেখক: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :