যেসব খাবার খেলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০২১, ১০:০৭

মহামারি করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে মৃত্যু মিছিল। যে সব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হলে অনেকেরই অক্সিজেন লেভেল যখন কমতে শুরু করে, এর চেয়ে অসহায় অবস্থা আর কিছুই থাকে না। কারণ করোনা ভাইরাস আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমিত করে। অনেক সময় সব ধরনের চিকিৎসাও হার মানে অক্সিজেন ধরে রাখতে আর যার পরিনাম হতে পারে মৃত্যুও। করোনায় আক্রান্ত হলে শ্বাসকষ্ট যে-কারওরই হতে পারে। তাই এই পরিস্থিতিতে শরীরে যাতে কোনওভাবেই অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

শরীরে অক্সিজেন বাড়ানোর জন্য গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বাতাসের সাহায্যে আপনার ফুসফুসে প্রবেশ করতে এবং শেষ পর্যন্ত রক্ত প্রবাহে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। একটি পার্ক বা যেখানে অনেক গাছ আছে এমন জায়গায় সকালের হাঁটলেও বিশুদ্ধ বাতাসের সঙ্গে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায়। আপনার ঘরের বায়ুচলাচলে যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। নিয়মিত ওয়ার্কআউট, সাঁতার কাটা ও শরীরচর্চাও অক্সিজেন বাড়াতে সাহায্য করে।

অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার ৮০% খাদ্যতালিকায় রাখলে তা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা যথাযথ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এইধরনের খাবার শরীরকে সক্রিয় রাখার পক্ষেও সহায়ক। এছাড়া এই খাবারগুলো দেহের পিএইচ মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং ভিটামিন ও মিনারেলসের শোষণে সহায়তা করে। অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে পাতে থাকুন অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার।

পাতিলেবু

অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্যতালিকায় যে-সমস্ত খাবার যোগ করতে পারেন, তার মধ্যে প্রথমেই থাকবে পাতিলেবুর নাম। পাতিলেবু অ্যাসিডিক হলেও তা শরীরের মধ্যে গিয়ে অ্যালকালাইন হয়ে যায়। এছাড়া এর ইলেকট্রোলাইটিক বৈশিষ্ট, ভিটামিন সি দ্রুত সর্দিকাশি, ফ্লু, হাইপারঅ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা ইত্যাদির থেকে মুক্তি দেয়।

ব্রকোলি

সুপার ফুড ব্রকোলি বিভিন্ন রকম ফ্লু থেকে আপনাকে নিরাপদে রাখতে পারে। ব্রকোলি যেমন বাড়তি মেদ ঝরিয়ে দেহকে সুস্থ রাখে, তেমনই শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণেও এটি কার্যকরী।

বাদাম কিশমিশ

আমন্ড, কাজু ইত্যাদি বাদাম শরীরে অ্যালকালাইনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ, বি, সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্ত চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। এর ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে। তাই যে-কোনও সময় খিদে পেলে ড্রাই ফ্রুটস স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়বে।

অঙ্কুরিত ডাল বা কাঁচা ছোলা

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে শরীরে পুষ্টির যোগান দিতে কাঁচা ছোলা, অঙ্কুরিত ডালজাতীয় খাদ্য খুবই উপকারী। এতে থাকা ফাইবার এনার্জি যোগায়। এছাড়া দেহের ক্ষতিকারক টক্সিন উপাদানগুলো বের করে দিয়ে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটায়।

রসুন

সকালে উঠে খালিপেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন রক্তচাপ কমাতে ও শরীরের ব্যথা সহ অন্যান্য অনেক সমস্যায় ম্যাজিকের মতো কাজ করে। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে নিরাপদে থাকতে, রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের যোগান রাখতে নিয়ম করে কাঁচা রসুন খান।

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমে, বাড়তি ওজনও কমে। মিষ্টি আলু নানা প্রাকৃতিক খনিজে ভরপুর। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনও রয়েছে যা আমাদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতিপূরণ করতে সাহায্য করে।

গ্রিন টি

গ্রিন টি-তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। ফলে গ্রিন টি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এছাড়া গ্রিন টি মেটাবলিজমের হার ঠিক রাখে বলে শরীরে অক্সিজেনের পর্যাপ্ত যোগান থাকে। মেদ কমিয়ে ফিট থাকতে চাইলেও গ্রিন টিকে ভরসা করতে পারেন।

তরমুজ

উচ্চ অ্যালকালাইন মাত্রা যুক্ত এই ফলের পিএইচ মান ৯। এতে অধিক পরিমাণে পানি এবং ফাইবার থাকার ফলে এটি ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন, বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি থাকে যা শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও এনার্জির যোগান দেয় এবং শরীরকে সক্রিয় রাখে।

টকদই

খাবার শেষে একবাটি টকদই না হলে অনেকেরই চলে না। টকদই শরীরের পক্ষে খুব উপকারী। এটি পেটের সমস্যায় কাজে দেয়। এছাড়া একবাটি টকদই খাদ্যতালিকায় রাখলে তা শরীরে অক্সিজেনের পর্যাপ্ত যোগানেও সহায়তা করে।

ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকামের পিএইচ মান ৮.৫। এটি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। ক্যাপসিকামে থাকা উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ দেহে রোগ, স্ট্রেস সৃষ্টিকারী ফ্রি র‍্যাডিকালের হাত থেকে দেহকে মুক্ত রাখে। ফলে শরীর ঝরঝরে থাকে। অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্যতালিকায় আপনি ক্যাপসিকাম নিয়ম করে রাখতে পারেন।

পালংশাক

পালংশাক অপর একটি পুষ্টিকর সবুজ শাক। এতে প্রচুর আয়রন থাকে বলে রক্তাল্পতার রোগীদের ক্ষেত্রে এটি প্রাকৃতিক ওষুধ বলে বিবেচ্য হয়। এছাড়া অনেকেই জানেন না, এতে থাকা অক্সিজেন রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।

এছাড়াও অ্যাভোকাডো, পাকা কলা, বেরিজাতীয় ফল, খেজুর, গাজর, আপেল, খোবানি, আঙুর, আনারস, আম, পেঁপে, কিউই ইত্যাদিও অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার এবং প্রত্যেকটিই পুষ্টিকর। ফলে এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্যতালিকায় এগুলো যোগ করুন। পর্যাপ্ত পানি খান। তাহলেই অনেকাংশে সুস্থ থাকবেন। উল্লিখিত অক্সিজেন সমৃদ্ধ খাবারগুলো আপনার রক্তে অক্সিজেনের স্তর বাড়াতে সহায়তা করবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :