বিশ্ব ইমোজি দিবস আজ

কোন ইমোজির কী অর্থ

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০২১, ১০:১৪

সালটা ১৯৯৭। মোবাইল কমিউনিকেশনকে আরও ঝকঝকে করতে ইমোজির আবির্ভাব। এসএমএসে চট করে মনের ভাব প্রকাশ করার কাজেই শুরু হল এই পিকটোগ্রাফের ব্যবহার। শুরু থেকেই হিট ইমোজি। একে একে প্রায় সব মোবাইল কোম্পানিই নেমে পড়ল মাঠে। শুরু হল ইমোজির বিবর্তন। সময় এগোচ্ছে, বদলে যাচ্ছে মোবাইল ফোন। ফিচার ফোন থেকে অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন। এসএমএস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম। বাড়তে থাকল ইমোজির ব্যবহার। এন্ট্রি নিল একের পর এক মুখ, ইমোশন ও তার নানা ব্যবহার।

সারাদিন হোয়াটসঅ্যাপে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি যে ইমোজি দিয়ে শব্দ কমিয়ে ইমোশন বাড়ান, সেগুলোর আসল মানে জানেন? বলি, ঠিক জায়গায় ঠিক ইমোজি দিচ্ছেন তো? ওয়ার্ল্ড ইমোজি ডেতে আসুন জেনে নেই ইমোজির কোন মানে।

হাই ফাইভ

শুরুতেই ভুল! জাপানিরা কী ভেবেছিলেন আর এ দেশে এসে কী রূপ নিল তাদের ভাবনার এই হাই ফাইভ ইমোজি। কোনও কাজে কেল্লাফতে, পার্টনারের হাতে হাত মিলিয়ে ঝটপট দে তালি। এটাই ছিল হাই ফাইভ ইমোজির মানে। কিন্তু দেখুন দেখি কী কাণ্ড! এটা এখন সালাম বিনিময়ের ইমোজি হয়েছে।

মগজে বিস্ফোরণ

মাথার মধ্যে বিস্ফোরণ! দেখে মজা লাগলেও, যেখানে সেখানে এই ইমোজির ব্যবহার একদম নয়। মাথায় বিস্ফোরণ ইমোজিটি হতবাকের মতো দেখতে লাগলেও, এর মানে মোটেই তা নয়। বরং হঠাৎ কোনও আইডিয়া এসে গেল, দুম করে চমকে গেলেন কিংবা কোনও বিষয়ে অবিশ্বাসী হলে এটি ব্যবহার হতেই পারে।

পরীর মুখ

মাথার উপর নীল রঙের বলয়! ঠিক যেন শনিগ্রহ। তার নিচে মিষ্টি একটা হাসিমুখ। ইমোজির দুনিয়ায় এর নাম অ্যাঞ্জেল ফেস। ইমোজি দেখলে মনে হবে ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানে না। আসলে কিন্তু মহাবিচ্ছু এই ইমোজি। এটি মূলত ব্যবহার হয়, সবজান্তা হয়েও, দেখুন আমি কতটা মাটির মানুষ বোঝাতেই!

শয়তানের সর্দার

একে তো বেগুনি রং। তার উপর মাথায় শিং। একজনের মুখে শয়তানের হাসি, আর আরেক জনের রাগী মুখ। ইমোজির দুনিয়ায় এর নাম ডেভিলস ফেস। মানুষের পিছনে লাগতে দারুণ ওস্তাদ এই দুই ইমোজি। তবে দুইজনের স্টাইলটা আলাদা। একজন পিছনে লেগেও আপনার মুখের উপর হেসে উঠবে। অন্যজন নেবে প্রতিশোধ! মস্করা করে কারও পিছনে লাগতে কিংবা হাটে হাঁড়ি ভাঙার পর এই ইমোজি ব্যবহার করাই যায়। রাগী মুখ এরই পালটা ইমোশন!

নেশা নেশা, আগুন আগুন

ইমোজির দুনিয়ায় একে ‘জেনি ফেস’ নামেও ডাকা হয়। তবে এটি বেশি জনপ্রিয় ‘ড্রাঙ্কেন ফেস’ নামেই। নামে ড্রাঙ্কেন হলেও, এই ইমোজি কিন্তু একেবারে মদ্যপ হওয়ার পক্ষপাতী নয়। বরং এই নেশা হতে পারে যেকোনও রকম। এটি মূলত, কোনও বিষয়ে বা কাউকে নিয়ে সারাদিন মত্ত থাকা বোঝাতেই ব্যবহার হয়।

বোঝে না সে বোঝে না

কোনও কিছুতেই নেই তাপ উত্তাপ! একেবারেই হতাশ। কেউ কিছু লিখল, আপনি বুঝলেন না, তাকে সেটা জানাতে সেও বুঝল না। গোটা ব্যাপারটাই কেমন একটা ঘ্যাট পাকানো। ঠিক এমন অবস্থাতেই এই ইমোজির ব্যবহার। আপনি বুঝেছেন, কিন্তু সে বুঝছে না। তথ্য অনুযায়ী, এই ইমোজি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন প্রেমিক-প্রেমিকারা। কোনও কারণে যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়, তাহলে কিছু না বলে পর পর এটা পাঠিয়ে দিলেই কেল্লাফতে! ইমোজির দুনিয়ায় এর নাম এক্সপ্রেশনলেস ফেস!

অবাক পৃথিবী মুখ পুরো হাঁ, চক্ষু দুটো ছানাবড়া করে চড়কগাছে। দেখলেই মনে হবে ভূত দেখল নাকি। বেশিরভাগ মানুষ কোনও বিষয়ে অবাক হলেই এটা ব্যবহার করে। তবে এই ইমোজির আসল ব্যবহার কিন্তু একেবারেই উলটো। কাউকে কোনও কাণ্ডে হাতে নাতে ধরে ফেলেছেন, সে ব্য়াটা বিষয়টা একেবারে কাটিয়ে দিল কিংবা অজান্তে মিসটেক করে বসলে এটি ব্যবহার করা যায়। ইমোজির দুনিয়ায় এর নাম ফ্লাসড ফেস। সব ব্যাপারেই আপনি একেবারে বিন্দাস সেটা বোঝাতেও নাকি এই ইমোজির ব্যবহার হতে পারে।

হাগিং ইমোজি

ইমোজির দুনিয়াতে এর নাম হাগিং ইমোজি। নাম থেকেই কাম বোঝা যায়। কোনও বিষয়ে সহমত হলেই জড়িয়ে ধরুন। তবে হ্যাঁ, দেখা গেছে দুষ্টু চ্যাটে আজকাল এর ব্যবহার কিন্তু প্রচুর। তাই শুধু সহমতে নয়, করোনা আবহে প্রিয় মানুষকে জড়িয়ে থাকা বোঝাতেও ব্যবহার হচ্ছে এই ইমোজি।

পেটে খিদে মুখে লাজ

যেমন নাম, তার তেমনি কাজ। খিদে পেলে, নো লজ্জা-শরম। বরং চিৎকার করে বলুন, আপনি খাবার খেতে চান। এই ইমোজি কিন্তু খাওয়ার আগে এবং পরে, দুটোতেই ব্যবহার হয়। সুস্বাদু খাবার দেখে জিভে জল বোঝাতেই মূলত ব্যবহার হয় এই ইমোজি। তবে নির্লজ্জ হয়ে দুম করে কিছু বলে ফেললেও এই ইমোজি ব্যবহার করা যায়। তথ্য বলছে, আজকাল নাকি দুষ্টু চ্যাটেও এর ব্যবহার প্রচুর।

চুমুতে চমৎকার

ইমোজির দুনিয়ায় চুমুর সম্ভার। কোনওটাতে শুধুই ঠোঁট উচু করে পাউট! কোনওটায় ঠোঁটের আগায় ছোট্ট হৃদয়। আছে লালরঙের লিপস্টিক ঠোঁটও। তথ্য বলছে, এই কিসিং ইমোজি ব্যবহার বয়স ভেদে নানারকম। শুধু বন্ধু হলে ফাঁকা চুমু, হালকা প্রেম হলে ঠোঁটে হৃদয়মাখা চুমু, আর প্রেম যদি গাঢ় হয় তাহলে লিপস্টিক চুমু! একেবারে চকাস! শেষের চুমুর ব্যবহার রাত বাড়লেই। অন্যসব চুমু চলতে পারে দিনভর।

সত্যি হাঁচি

এ হাঁচি সে হাঁচি নয়। ইমোজির দুনিয়ায় হাতে টিস্যু নিয়ে গোলাকার মুখ। এই হাঁচির নেপথ্যে শরীর খারাপের লেশমাত্র নেই। বরং আপনি কারও কাজে হতাশ হলে এটি ব্যবহার করতে পারেন কিংবা কাউকে যদি বোঝাতে হয় যে তার কাজে আপনি একটুও খুশি নন, তাহলে এই হাঁচির ইমোজি ব্যবহার মাস্ট!

কখনো গরম কখনো ঠান্ডা

খুব গরম পড়েছে? গরমে খুব কষ্ট পাচ্ছেন? লালমুখো হয়ে পাঠিয়ে দিলেন এই ইমোজি। লোকে তো বুঝল। কিন্তু ইমোজির দুনিয়ায় এর আসল মানে কারও চেহারার প্রতি আপনি ভীষণভাবে আকৃষ্ট ! রয়েছে হালকা যৌন উসকানিও! আর কোল্ড ফেস? ঠিক গরমের মতোই, আবহাওয়ার সঙ্গে এর কোনও যোগাযোগ নেই। বরং কারও সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই বোঝাতে কিংবা কাউকে এড়িয়ে চলতে এর ব্যবহার করা হয়।

লোকে আমায় পাগল বলে

তথ্য অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে এই ইমোজি সবচেয়ে ভুল ভাবে ব্যবহার করা হয়। বেশিরভাগ মানুষ নাকি এটিকে হতাশ বা রাগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। তবে এটির আসল মানে বিজেতা। এই ইমোজির আরেক নাম ম্যাড ফেস!

সবজান্তা চশমাওয়ালা

চোখে চৌকো চশমা, মুখ থেকে বেরিয়ে রয়েছে দুটো দাঁত। সঙ্গে দুষ্টু একটা হাসি। এই ইমোজির নাম নার্ড। সবজান্তারাই এটা ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও মতামত দিয়ে এই ইমোজি টুক করে ছাপিয়ে দিলেন। কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের কোনও কথার উত্তরে এটি পাঠিয়ে দিলেন। প্রমাণ করলেন আপনি সব বোঝেন, সব জানেন।

তুই ব্যাটা মিথ্যুক

চোরের মায়ের বড় গলা শুনেছেন। কিন্তু ইমোজির দুনিয়ায় মিথ্যুকের লম্বা নাক। ইমোজির দুনিয়ার এর অবশ্য নাম পিনোকিয়ো ফেস। সেই রূপকথার গল্প। যেখানে কাঠের পুতুল মিথ্যে বললেই নাক লম্বা! আপনার সামনে কেউ যদি মিথ্যে বলে, টুক করে পাঠিয়ে দিন এই ইমোজি। বুঝিয়ে দিন আপনি সব জানেন!

বাঁকা মুখ

কেউ আপনাকে এটা পাঠালো। আর আপনি ভাবলেন, বাঁকা মুখে ভেংচি কেটেছে। আপনার এই ভাবনায় একেবারেই জল। তথ্য বলছে, এই ইমোজির সঙ্গে ভেংচি কাটার কোনও যোগই নেই। বরং এর নেপথ্যে রয়েছে সুপ্ত যৌন ইচ্ছে। কাউকে যৌনতায় উসকানি দিতে নাকি এই ইমোজি ব্যবহার করা হয়।

উলটে গিয়ে পালটে গেলাম

ছিল হাসি হয়ে গেল ব্যঙ্গ! কাউকে কোনও কিছু নিয়ে ব্যঙ্গ করতে এই ইমোজির দারুণ ব্যবহার। কাউকে হ্যাটা করতেও এই ইমোজি ব্যবহার করা যায়। তথ্য বলছে, কারও কোনও কথা যদি পছন্দ না হয়, উলটে গিয়ে তাঁকে আপাদমস্তক মেপে নেওয়া বোঝাতেও এটির ব্যবহার হয়।

চোখের তারা তুই

এই ইমোজি একেবারেই অন্ধ ভক্তদের জন্য। আপনি কাউকে দারুণ পছন্দ করেন কিংবা কোনও সেলিব্রিটির প্রেমে পড়েছেন, তাঁর কথা উঠতেই চোখের তারার ঝলকানি। মূলত এই ইমোশন বোঝাতেই ব্যবহার হয় স্টারস্ট্রাক ইমোজি।

কেঁচো খুঁজতে কেউটে

প্রবাদ আছে কেঁচো খুড়তে কেউটে। কিন্তু এই ইমোজিতে রয়েছে খোঁজার গপ্পো। চোখে আতসকাচ, চোখ মুখে কৌতূহল। কারও কথায় ভুল ধরতে হলে এটি ব্যবহার করা হয় সবচেয়ে বেশি। তথ্য বলছে এই ইমোজির আসল মানে খুব সচেতনভাবে কোনও কিছু পরীক্ষা করা। কেউ যদি আপনাকে মিথ্যে বলে, তাহলে একবার যাচাই করার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতেই পারে।

চোখে ধাঁধা

দুই চোখে কাটা চিহ্ন। ইমোজির দুনিয়ায় এর নাম ডিজি ফেস। অনেকে হতবাক হওয়া বোঝানোর জন্যও এটি ব্যবহার করে থাকেন। তবে কোনও বিষয় যদি আপনার একেবারেই পছন্দ না হয় বা একেবারেই মানতে না পারেন, তাহলে এই ইমোজি ব্যবহার করুন।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :