ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০২১, ২১:১৪ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২১, ২১:২৩

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, গোলাম আজমের দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে সহায়-সম্পদ বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে পরিবারটি।
স্থানীয়রা বলছে, উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের দরাপপুর গ্রামের মমতাজ মিয়ার বাড়ির মৃত মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে গোলাম আজম (৩১) চট্টগ্রামে আবুল খায়ের কোম্পানিতে এইচআর (প্রশাসন) হিসেবে চাকরি করেন।
ভুক্তভোগীর মামা সেনবাগ উপজেলার কাজিরখিল গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, তার ভাগনে গোলাম আজমের জন্য কিডনি কিনতে হলে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে কিডনি কেনা সম্ভব নয় বলে আজমের মা ছেলেকে নিজের কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগে যোগাযোগ করেন।
পূর্বচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান জানান, অসুস্থ গোলাম আজম অত্যন্ত মেধাবী। তার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। কেউ কিডনি দিতে রাজি হয়নি। পরিবারের পক্ষে কিডনি কেনা সম্ভব না হওয়ায় মা ছালেহা বেগম কিডনি দান করছেন।
দাগনভূঞা ইয়ুথ সোসাইটির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী এমরান হোসেন পিন্টু জানান, আজমের বাবা ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত বছর তিনিও মারা যান। তিন কন্যা ও এক ছেলে নিয়ে সুখের সংসার ছিল ছালেহার। একমাত্র ছেলের অসুস্থতায় পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার।
উপার্জনক্ষম ছেলের অসুস্থতার কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন হতভাগ্য মা ছালেহা বেগম। তিনি জানান, তার তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়েটি চট্টগ্রামে মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী। তাকেও বিয়ে দিতে হবে। একদিকে ছেলের চিকিৎসা, অন্যদিকে মেয়ের বিয়ে নিয়ে দিশেহারা তিনি।
ছেলের বাকি চিকিৎসা কীভাবে করবেন এমন দুশ্চিন্তায় তার প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে। কিডনি সংযোজন এবং পরে হাসপাতালের ব্যয়ভার কীভাবে বহন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সমাজের বিত্তশালী লোকজন যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান তাহলে ছেলের ভবিষ্যৎ চিকিৎসা সম্ভব।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এলএ)