মোট মৃত্যুর ১৯, শনাক্তের ১৭ শতাংশ আঠারো দিনে!

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০২১, ২২:৪০ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২১, ১৭:০৪

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

প্রায় দেড় বছর ধরে দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকলেও গত দেড় মাস ধরে এর ভয়াবহ প্রকোপ চলছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। দুটিই বারবার রেকর্ড গড়েছে। গত ১৮ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মোট মৃত্যুর ১৯ শতাংশ এবং শনাক্তের ১৭ শতাংশ হয়েছে এই সময়ে।      

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট বলছে, রবিবার পর্যন্ত দেশে করোনায় মারা গেছে ১৭ হাজার ৮৯৪ জন। গত ১৮ দিনে মারা গেছে তিন হাজার ৩৯১ জন। এটি মোট মৃত্যুর প্রায় ১৯ শতাংশ।

দেশে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১১ লাখ তিন হাজার ৯৮৯ জন। এর মধ্যে গত ১৮ দিনেই সংক্রমিত হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৭৩১ জন, যা মোট সংক্রমণের ১৭.৩০ শতাংশ।  

গত তিন সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসে টানা শতাধিক মৃত্যু হয়েছে। ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিনই কম-বেশি দেড়শজন করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে। গড়ে এই সাত দিন ১৫৫ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে। তবে সপ্তাহের শেষ দিন ৭ জুলাই হঠাৎ মৃত্যু ছাড়িয়ে যায় দুই শতাধিক। সেদিন করোনায় মারা যায় ২০১ জন।

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ লাগাতার দু’শো ছাড়িয়েছে। ৮ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন ১৯৯, ২১২, ১৮৫, ২৩০, ২২০, ২০৩ ও ২১০ জন মারা যায়। গড়ে প্রতিদিন মারা যায় ২০৮ জন। আর ওই এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমিত হয় গড়ে ৩০.৪৭ শতাংশ।  

চলতি সপ্তাহে ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ জুলাই এই চার দিনে করোনায় মারা গেছে ২২৬, ১৮৭, ২০৪ ও ২২৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৮ জনের শরীরে। সবমিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৮৯৪ জন। আর শনাক্তের মোট সংখ্যা ১১ লাখ তিন হাজার ৯৮৯।

দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। প্রথম কয়েক মাস মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বাড়লেও তা আস্তে আস্তে কমে আসে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ৯৯ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ২৯ মার্চ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়ায়।

এরপর আসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ১৪ এপ্রিল সাত লাখ পেরিয়ে যায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। তবে মে মাসে শনাক্ত ও মৃত্যু অনেকটা কমে আসে। পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হতে সময় লাগে দেড় মাস; দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা আট লাখ ছাড়িয়ে যায় ৩১ মে।

দেশে করোনা পরিস্থিতির জটিল আকার ধারণ করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার দ্বারা। ভারতের এই ধরন দেশে শনাক্ত হওয়ার পর হু হু করে বাড়তে থাকে মৃত্যু ও শনাক্ত। ২৯ জুন মোট শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছায় নয় লাখে। এরপর মাত্র ১০ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হলে ৯ জুলাই মোট শনাক্তের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছে। সেই সংখ্যা ১১ লাখে পৌঁছাল মাত্র নয় দিনে।

এবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা এ ব্যাপারে সরকারকে বারবার সতর্ক করেছেন। সরকারও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জুলাইয়ের শুরুতে টানা ১৪ দিন কঠোর বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখে। তবে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছে বিধিনিষেধ। ২৩ জুলাই থেকে আবার শুরু হচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ। টানা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসআর/জেবি)