নিজের ঘরে প্রথম ঈদ: আনন্দে ভাসছে পরিবারগুলো

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০২১, ১৯:৪৫

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নিজের কোনো জমি জমা নাই, ঘরও ছিল না। অন্যের বাড়িতে থাকতাম। কোনো স্বাধীনতা ছিল না। যখন তখন মালিক ঘর ছেড়ে দিতে বলতো। ছেলেমেয়েরা প্রাণ খুলে হাসতে পারতো না, খেলতো পারতো না। এখন নিজের একটি ঘর হইছে। কেউ আর চোখ রাঙাতে পারব না। শেখ হাসিনা ঘর দিয়া আমরার বাপ-মার কাম করছে।

এভাবে বলছিলেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাকা ঘর উপহার পাওয়া হারুন মিয়ার স্ত্রী। আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের কেন্দুয়াই গ্রামে নির্মিত একটি ঘর পেয়েছেন তিনি। পুকুড় পাড়ে গাছ গাছালি ঘেরা মনোরম পরিবেশে এখানে সাতটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পাকা ঘর দেয়া হয়েছে। শুধু হারুন মিয়ার স্ত্রী নয়, ঘর পাওয়া প্রত্যেকটি পরিবারের রয়েছে এমন দুঃখ দুর্দশার করুণ কাহিনী।

গত ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এসব ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বুঝিয়ে দেন।

বাকপ্রতিবন্ধী শাহ আলমের স্ত্রী হনুফা বলেন, ঘর পেয়ে অনেক শান্তি লাগতেছে। আগে মাইনষের বাড়ি বাড়ি থাকছি। এই বাড়ি থেকে হেই বাড়ি গেছি। মালিকের মন জোগায়া থাকতে না পারলে বাইর কইরা দিছে। ২৪ ঘণ্টাও টাইম দেয় নাই।

হনুফা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ঘর দিয়েছেন। আমাদের মা-বাপ যা করতে পারে নাই, শেখ হাসিনা আমাদের জন্য তা করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। জায়গাটি তাদের খুব পছন্দ হয়েছে বলে জানান তিনি।

আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর পাওয়া পরিবারগুলো এবার নিজের ঘরে প্রথম ঈদ করবে। এজন্য প্রতিটি পরিবার খুবই আনন্দিত উচ্ছসিত। তবে এসব পরিবারের মধ্যে কেউই কোরবানি দিবে না। তারা রুটি সেমাই রান্না করে পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানান।

রবিবার বিকালে কেন্দুয়াই গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, শিশুরা ছুটাছুটি করছে। নারীরা নিজ নিজ ঘর গোছাতে ব্যস্ত।

ছোট্ট মেয়ে রাহিমা বলে, এখানে এসে আমার ভালো লাগছে। জায়গাটি খুব সুন্দর। অন্যদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। সবার সঙ্গে  খেলাধুলা করতে পারি। 

আশ্রয়নের বাসিন্দা রিকশা চালক রাজ্জাক মিয়া বলেন, আমাদের কোরবানি দেয়ার তৌফিক নাই। এজন্য কোরবানি দিমু না। তবুও আমরা খুশি। খাই আর না খাই নিজের একটা ঘর পাইছি, এইডাই সবচেয়ে বড় আনন্দ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/কেএম)