মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে চিলমারীর হরিজন সম্প্রদায়

খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার হরিজন সম্প্রদায়ের প্রায় শতাধিক মানুষ। বর্তমানে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। সরকারি কোনো সহায়তা বা ত্রাণও তারা পায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে থানাহাট বাজার, রমনাসহ চিলমারী উপজেলা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, অনেকদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ।। লকডাউনে কাজ না থাকায় তাদের আয়ের পথও বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় কেউ এখন পর্যন্ত খবর নেয় নি।

বেবী রানী নামে এ সম্প্রদায়ের এক নারী আক্ষেপ করে বলেন, এই সমাজে আমাদের তো কেউ মানুষ মনে করে না, আমরা যদি কোনো কিছু খাইতে হোটেলে যাই তাহলে হোটেল মালিকরা আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করে তা বলার মত না। তারা আমাদের কুকুরের মতো করে বাইরে খাবার ফেলে দেয় সেখান থেকে তুলে নিয়ে আমাদের খাইতে হয়। আমরা কি মানুষ নই।

গীতা রানী নামে আরেক নারী বলেন, আমরা ময়লা পরিস্কার করি, আবার সেই ময়লায় এসে আমাদের ঘুমাতে হয়। আমরাতো এ দেশের নাগরিক, তাহলে আমরা কেন ভালো কোনো জায়গায় থাকতে পারি না। সরকার তো সবাইকে ঘর দিচ্ছেন আমাদের কেন দেয় না।

শান্ত নামে একজন বলেন, আমরা কেউ অসুস্থ হলে আমাদের পাশে কেউ এসে দাঁড়ায় না । হাসপাতালে গেলে তারা অন্য হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে তাড়িয়ে দেয়। শুধু চিকিৎসা নয় আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে সেখানেও আমাদের নানান কথা শুনতে হয়। শিমুল বলেন, আমরা সরকারী খাসের জায়গায় কোনমতে পরিবার নিয়ে থাকি, আমাদের ঘর দেয়া তো দুরের কথা উল্টো সেই জায়গা থেকে উচ্ছেদ করে দেয়। আমরা সুইপার বলে কি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবো না। আমরা না খেয়ে থাকলেও এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যানরা কোনো দি খবর নেয় না।

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, হরিজন সপ্রদায়কে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। তারা যে ত্রাণ পাননি সে অভিযোগ মিথ্যা। পরিবর্তীতে তাদের আরো ত্রাণ দেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/পিএল)