উত্তরের পথে নজিরবিহীন যানজট, ভোগান্তি চরমে
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে। ঈদের আগের দিনের ভয়াবহ এই যানজটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ঘরমুখী মানুষ। সঠিক সময়ে বাড়িতে গিয়ে ঈদ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে শুরু হওয়া এই যানজট বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে করটিয়ার করাতিপাড়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। কিছু সময়ের জন্য গাড়ি চললেও পরে আবার আটকে যান গাড়ি। দীর্ঘসময় সড়কে আটকে থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। তবে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
সন্ধ্যা সাতটার পরও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার সড়কে যানজট দেখা গেছে। দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চন্দ্রা বাস টার্মিনাল থেকে চন্দ্রা–নবীনগর এবং উত্তরবঙ্গমুখী সড়কে ২৫ কিলোমিটারে ব্যাপক যানজট থাকলেও পরে যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পরে ৩০ কিলোমিটারের বেশি যানজট সৃষ্টি হয়। থেমে থেমে কিছু সময়ের জন্য গাড়ি চলাচল করলেও পরে আবার ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে। সময় যতই গড়াচ্ছে যানজটের তীব্রতা যেন ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছে ঘরে ফেরা হাজারো যাত্রী।
এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই পাড়ে ভয়াবহ যানজট ও সেতুর ওপর পরিবহন বিকল হওয়ায় বিকাল পৌনে ৪টা থেকে বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের টোলপ্লাজায় টানা এক ঘণ্টা টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এরপর পুনরায় টোল আদায় চালু করার ১৫ মিনিট পরেই আবারও বন্ধ রাখা টোল আদায়। এরপর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আরও তিনবার টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়।
সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়িতে ওঠার কথা থাকলেও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গা ঘেঁষে বাসের ছাদে, ট্রাকে করেও যাচ্ছে মানুষ। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানলেও ছোট পরিবহনগুলো তা একেবারেই মানছে না।
হাইওয়ে পুলিশ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে করটিয়ার করাতিপাড়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মহাসড়কে যানজটের কারণে বিকল্প পথে আঞ্চলিক বিভিন্ন সড়ক ও নৌপথ ব্যবহার করছেন যাত্রীরা।
পাবনা এলাকার বাসিন্দা খোকন বলেন, ভোর ৫টায় চন্দ্রা এসেছি। কিন্তু যানবাহনের সংকটের কারণে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছি। জ্যামের কারণে গাড়ি আসছে না।
উত্তরবঙ্গমুখী শ্যামলী পরিবহনের চালক ইমতিয়াজ বলেন, ‘চার ঘণ্টা থেমে থেমে নবীনগর থেকে চন্দ্রা এসে পৌঁছালাম। সামনের অবস্থা আরও ভয়াবহ।’
সালনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর গোলাম ফারুক জানান, সড়কের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। চন্দ্রা থেকে নবীনগর ও টাঙ্গাইল রোডের গোড়াই পর্যন্ত উভয় দিকে এই যানজট দেখা যাচ্ছে। তবে চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের দিকে যানজট তুলনামূলকভাবে একটু কম মনে হচ্ছে। যানজটে আটকা পড়ে ঘরমুখী মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যানজট নিরসনে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এমআর)