চট্টগ্রামে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ‘লোকসান’

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০২১, ২৩:০১ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১, ২৩:১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

রাজধানীতে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত দুই বছরের চেয়ে এবার কিছুটা ভালো হলেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এর উল্টো চিত্র। এবার চামড়ার দাম গতবারের চেয়েও কম বলে জানাচ্ছেন সেখানকার বিক্রেতারা। সাধারণ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা চামড়া কিনে এবার লোকসানের মুখে পড়ছেন। কিন্তু আড়তদাররা এ কথা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, চামড়ার দাম তেমন কমেনি।

বুধবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগর ঘুরে চৌমুহনী বাজারে গিয়ে এমন তথ্য মিলেছে।

বিগত কয়েক বছর ধরে লাভ না থাকায় অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে চামড়া ব্যবসা। গত দু’বছর লাভের মুখ না দেখায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কেনা চামড়ার ঠাঁই মেলে নগরের রাস্তায়। এবার লাভের আশা করলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে উঠবে না ধরে নিয়ে লোকসানের প্রহর গুনছেন তারা।

নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে তিনশ থেকে চারশ টাকায় কেনা চামড়া আড়তদাররা কিনতে চান ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। কিছু কিছু বড় চামড়ার সর্বোচ্চ মূল্য উঠছে আড়াইশো টাকা পর্যন্ত।

মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ছোট ব্যাপারীরা বলছেন, সকাল থেকে তারা ছোট–বড় চামড়া ১৩০ থেকে ৩০০ টাকায় পর্যন্ত সংগ্রহ করতে থাকেন।তবে বিক্রি করতে এসে চামড়ার কাঙ্ক্ষিত পাচ্ছেন না। লোকসানে পড়লে এবারো রাস্তায় চামড়া ফেলে দেওয়ার কথা জানালেন অনেকই।

মুরাদপুরে আড়তে চামড়া বিক্রি করতে আসা মোসুমি ব্যবসায়ী বাদল মিয়া বলেন, গতবার যে চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ছিল, এবার তা ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে চাচ্ছেন আড়তদারেরা। এখন ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চৌমুহনীতে রাস্তার ওপর চামড়া নিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। রয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও। আড়তদারদের প্রতিনিধিরা এখানে এসে চামড়া কিনে নিয়ে যাবেন। কিন্তু দরদামে মিলছে না তাদের সঙ্গে।

ফেরদৌস নামের এক সাধারণ ব্যবসায়ী বলেন, ‘৩০টির মতো চামড়া এনেছি। এখন দাম দিতে চায় কেনা দামের চেয়ে কম। কীভাবে বিক্রি করব। চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে কম।’

আব্দুর রশিদ নামের এক সাধারণ ব্যবসায়ী জানান, তিনি ৩০টির মতো চামড়া এনেছেন। কিন্ত এখন আড়তদারেরা দাম দিতে চায় কেনা দামের চেয়ে কম। তিনি বলেন, কীভাবে বিক্রি করব। চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে কম।’

তবে, মৌসুমি ব্যবাসীয়দের অভিযোগ মানতে নারাজ আড়তদারেরা।  দুলাল নামের এক আড়তদার মৌসুমি ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনেছেন। তিনি জানান, এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি গড়ে ২৮০ টাকা করে অন্তত ৩০টি চামড়া কিনে নেন। যার থেকে তিনি কিনেছেন ওই সাধারণ ব্যবসায়ী দাবি করেন, তিনি অনেকটা লোকসান দিয়ে দুলালের কাছে চামড়া বেচেছেন।

এ ব্যাপারে দুলাল বলেন, চামড়ার দাম আগের চেয়ে কিছুটা কম। তবে অত কম নয়। বড় চামড়া ঠিকই ৩৫০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে।

এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রক্রিয়াজাতকারী কাঁচা চামড়ার দাম ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৩৩ থেকে ৩৪ টাকা নির্ধারণ করেছে। কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও মজুরি খরচ যোগ করতে হয়। আড়তদারদের মতে, তাতে ফুটপ্রতি ১২ টাকা খরচ হয়। খুচরা বাজার থেকে আড়তদারদের কাছে চামড়া চলে যায়। 

সাধারণ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মানতে চাচ্ছেন না বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সহসভাপতি আবদুল কাদেরও। তিনি বলেন, ‘বড় চামড়ার দাম রয়েছে। ছোট চামড়াগুলো একটু কম।  সাধারণ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে দাম পাচ্ছেন না বলছেন, তা সত্য নয়।

(ঢাকাটাইমস/২১ জুলাই/ইএস)