সাংবাদিকরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০২১, ২২:১৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সমাজের অব্যক্তদের পক্ষে আমাদের কথা বলা দরকার, সমাজ যেদিকে তাকায় না সেদিকে দৃষ্টি দিতে পারেন একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারেন, অব্যক্তদের পক্ষে কথা ব্যক্ত করতে পারেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, দেশটা যে এগিয়ে যাচ্ছে সে গল্পটাও মানুষকে আমাদের জানাতে হবে। তাহলে মানুষ আরও স্বপ্ন দেখবে। দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। মানবিক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, যাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ আখ্যা দিয়েছে, তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অথচ এটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোনো  জোরালো দাবি ছিল না।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে)আয়োজনে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটু, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম। 

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সমাজে এমন অনেক বিষয় আছে, সমাজ সেদিকে তাকায় না। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো পাগলের পেছনেও একটা গল্প আছে, ফ্যাল ফ্যাল করে তাকানো মানুষটার কিছু বেদনা আছে, সেই বেদনা শোনার সময় সমাজের নাই, সমাজ তাকে জিজ্ঞেস করে না, একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক সেটি সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারেন। 

মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা লেখনির মাধ্যমে সমাজকে উজ্জিবিত করতে পারেন, একজন সাংবাদিকের অনেক ক্ষমতা, সেই ক্ষমতা হয়তো নিজে অনুভব করেন না। একজন সাংবাদিক যার মুখে ভাষা নেই তাকে ভাষা দিতে পারেন। যে কথা বলতে ভুলে গেছে কিংবা ভয় পায় তার মুখে ভাষা দিতে পারেন। যে স্বপ্ন দেখতেও ভুলে গেছে, স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়, তাকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন। অব্যক্তদের পক্ষে কথা ব্যক্ত করতে পারেন। সাংবাদিকরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের একটি নান্দনিক ও ঐতিহাসিক জায়গা, সেটি নিয়ে  চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ রাখার কারণে তিনি ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ’ পদকে ভুষিত হয়েছেন। সুতরাং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোন কাজ হবে না।

তিনি বলেন, সিআরবিতে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক সেটি আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাইনা। সরকার জনগণের বিপক্ষে কোনো কাজ করবে না। আমিও বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করবো।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজে বসবাস করি, এখানে বিতর্ক থাকবে সমালোচনা থাকবে, কিন্তু এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও হতে হয়। ভালো কাজের যদি প্রশংসা না হলে যারা ভালো কাজ করে তারা কখনো উৎসাহ পাবে না। সরকারে থাকলে সবই যে খারাপ সেটি বিশেষ করে বিএনপিসহ কেউ কেউ মনে করে। তারা সরকারে থাকলে সব ভালো, আমরা সরকারে থাকলে সব খারাপ। দেশটা কি এমনি এমনিতে এগিয়ে গেল- প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।   

ড. হাছান বলেন, গত সাড়ে বার বছরে মানুষের যে উন্নয়ন হয়েছে তা কল্পনাতীত, আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে।  জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে এই এগিয়ে যাওয়া।

তথ্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার তিন লাখ টাকা পাচ্ছে, কেউ অসুস্থ হলেও টাকা পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কল্যাণ ট্রাস্টে সিদ্ধান্ত হয়েছে সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অনুদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেই শুধুমাত্র সাংবাদিকদের করোনাকালীন এককালীন সহায়তা দেয়া হয়েছে, সেটা আশপাশের ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানসহ কোনো দেশে করেনি। প্রধানমন্ত্রী ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন করোনাকালীন সহায়তার জন্য। ঈদুল আজহার আগেই সেগুলোর  বিতরণ শুরু হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক হিসেবে কাজ করেন, সাংবাদিকদের কথায় সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে, সমাজকে সঠিক পথে প্রবাহিত করতে পারে। আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য হচ্ছে দেশটাকে গড়া, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশটাকে নিয়ে যাওয়া এবং একটি মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।

(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/কেএম)