ফকির আলমগীর: দেখা না হলে যাবেন না

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৩ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১, ১৯:১৪

ড. সৌমিত্র শেখর

আমি ফকির আলমগীর ভাইকে বলি: ‘দেখা না হলে যাবেন না কিন্তু।’ হ্যাঁ, তেমনই তিনি আমাকে বলেছিলেন। বলেছিলেন: ‘দেখা হবে সৌমিত্র দাদা’।

করোনার কারণে টিভি অনুষ্ঠান প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। নিউজ-বাইটেও প্রায়ই ‘না’ করে দিই। ঘরে থাকি; রীতিমতো নন্দলাল হয়ে গেছি। ২০২০-এর জুন-জুলাইয়ে আমার এক দাদাজি বলেছিলেন, ‘বাসায় এসো। আড্ডা হবে। তুমি আলেকজান্ডারের মতো জয় করে চলেছ, ভয় পেলে কি চলে?’ আমি বলেছিলাম: ‘না, করোনা নিয়ে আমি ভীতুর ডিম। এখন আপনার বাসায় যাব না।’ এখনও যাইনি। দাদাজি, আপনি এই পোস্ট পড়বেন, জানি; আমাকে ক্ষমা করুন।

আদতেই, ২০২০-এর মার্চের আগে আমি দৃপ্তপদে সবদিকে বিচরণ করেছি। পরে থেমে গেছি। তারপরও কিছু কথা রাখতে হয়েছে। একটি টেলিভিশনের সিইও যখন সহোদরসম স্নেহ দিয়ে আহ্বান করেন, তখন সেখানে না গেলে চলে না। আবার একুশের অনুষ্ঠান। গিয়েছিলাম ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আর গণশিল্পী ফকির আলমগীরের সঙ্গে আলাপ-- সেটাওতো সম্মানের।

ফকির আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় তিন দশকের। শুরু থেকেই ঘনিষ্ঠতার। আমাকে কেন ‘সৌমিত্র দাদা’ ডাকেন, একথা একদিন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘তোমাকে আমি ছোটো ভাইয়ের মতো দেখি। এটা আদরের ডাক।’ এরপর আর কথা থাকে না। ফকির আলমগীর ভাইয়ের বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি বলতে থাকেন। তাঁর পেট থেকে মাথা অবধি শুধুই ইতিহাসতো, তাই তাঁর কথা মানেই ইতিহাসের টীকাটিপ্পনী। তিনি বাংলা পপসংগীতকে গণমানুষের ধারায় নিয়ে এসেছেন বাজারি ধারাকে ‘বাইপাস’ করে। সেদিন অনুষ্ঠান ধারণ শেষে একই সঙ্গে নেমেছিলাম লিফট দিয়ে। তাঁর তাড়া ছিল। এরপরই বিটিভিতে তাঁর ডাক। যে যার গাড়িতে ওঠার সময় পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় হলো। ফকির আলমগীর ভাই আমাকে বলেছিলেন: ‘দেখা হবে সৌমিত্র দাদা’। এরপর তাঁর সঙ্গে আমার আর দেখা হয়নি। তাই, আমি বলবোই: ‘দেখা না হলে যাবেন না কিন্তু!’

লেখক: শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এসকেএস