ফেরির ধাক্কায় কতটুকু ক্ষতি হয়েছে পদ্মা সেতুর?

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২১, ০৯:৫৩ | আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২১, ১১:০৫

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২৩ জুলাই শুক্রবার মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা শাহ জালাল নামের একটি ফেরি পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে সজোরে আঘাত করে। এতে ফেরিতে থাকা বিভিন্ন বাসের অন্তত ২৫ জন যাত্রী আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুর পিলার। পিলারের পাইল ক্যাপের উপরিভাগ ও সাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এই ঘটনার দিন রাত ১০টায় শিবচর থানায় সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের একটি জিডি করেন।

সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা দেয়া ফেরি শাহ জালালের চালককে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়। এরপর শনিবার চালক আব্দুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। 

নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদেরের করা জিডিতে উল্লেখ করা হয়, এর আগেও একাধিকবার বিআইডব্লিউটিসির ফেরি সেতুর কয়েকটি পিলারে আঘাত করেছে। এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার বিআইডব্লিউটিসির সংশ্লিষ্টদের মৌখিক ও লিখিতভাবে সাবধানতার সাথে ফেরি চালানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটলে সেতুর নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। তাছাড়া ফেরিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসংখ্য প্রাণহানি ঘটতে পারে। 

শনিবার পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পিলারের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফেরি শাহ জালালের ধাক্কায় পদ্মা সেতুর কোনো ক্ষতি হয়নি। যেটুকু আঘাত লেগেছে, সেটা নিয়ে চিন্তিত নন পদ্মা সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, এতে সামান্যই ক্ষতি হয়েছে। এটা কোনো ব্যাপার নয়। ধাক্কা লাগতে পারে এমন চিন্তা তো আমাদের ছিল, যেহেতু বড় নদীর মধ্যে বড় জাহাজ যাবে। সেই প্রভিশন আছে, ধাক্কা লাগতে পারে। তবে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। এর পেছনে অন্য কিছু আছে কি না তা জানতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হবে বলেও তিনি জানান।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানান, ফেরির ধাক্কায় সেতুর পিলারের তেমন কিছুই হয়নি। এ ধরনের দুর্ঘটনার কথা বিবেচনায় রেখে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। ১০০ টন ওজনের বিশাল আকৃতির জাহাজের ধাক্কাতেও সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। তারপরও পদ্মা সেতুর প্রকৌশল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানান তিনি।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। একইসঙ্গে চলতে থাকে রোডওয়ে, রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোসহ অন্যান্য কাজ। সেতুর মূল আকৃতি দোতলা।

মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যেই এই সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এজেড/কেআর)