অভিভাবকত্বের দায়

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২১, ১৪:৫৬

নাহিদ ইমরান শাওন

লেখাটার শিরোনাম ‘গুড প্যারেন্টিং বা ভালো অভিভাবকত্ব’ হতে পারতো কিন্তু একটা সাধারণ পর্যবেক্ষণে যেটা দেখতে পাই, তাতে অভিভাবক বা পিতামাতার সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক ভালো অবস্থানে খুব কমই আছে।

এর কারণ অনেক থাকলেও দায়টা অভিভাবকরা এড়িয়ে যেমন যেতে পারেন না তেমনি সন্তানদের সাথে সুসম্পর্কও বজায় রাখতে পারেন না।

আমি বাংলাদেশের সব স্তরের বাবা-মার কথা বলছি। সব শ্রেণিতেই ভালো অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে  যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যার প্রভাব কিশোর গ্যাং, মাদকাসক্তি বা অনুরূপ সামাজিক অবক্ষয়ের মতো মারাত্মক কিছু ব্যাধিতে লক্ষণীয়।

এত আসলে অভাব; কিন্তু যতটুকু ভালো অভিভাবকত্বের প্রচেষ্টা দেখা যায় সেটাও সন্তানদের সামান্য ব্যর্থতায় উল্টা হয়ে যায়। এর বাস্তব উদাহরণ করোনা মহামারি। বহু উদ্যমী সন্তান, যারা সত্যিই পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে চায় তারাও এই অনিবার্য ব্যর্থতায় বাবা-মাকে পাশে পাচ্ছে না।

মিডিল ক্লাস পরিবারের পিতা-মাতার একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য উদ্বিগ্নতা। তারা যতটা উদ্বিগ্ন ততটায় হতাশা প্রবণ। আর সেই হাতাশ মুখ দুটো সন্তানদের জন্য কি যে বেদনাদায়ক তা বাবা-মা কখনোই বুঝে না। বরং তাদের অপ্রিয় বাক্য হজম করতে হয় সন্তানদের।

সত্যি বলতে আপনি ভাগ্যবান, যদি আপনাকে সামান্য ব্যর্থতায় পরিবারের অপ্রিয় হতে না হয়।

ভালো অভিভাবকত্ব কখনো এদেশে হবে এটা আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। ঠিক কেন? বলছি...

১. দেশে সব পরিবারে প্রায় একজন ইনকাম করেন, তিনি বাবা।

২. মা গৃহিণী হলে তার কাজ ও কথা পরিবারে অগুরুত্বপূর্ণ বলা চলে।

৩. সন্তানরা মাধ্যমিক শেষ করলে পরিবার তাকে বোঝা মনে করতে শুরু করে। (তার ব্যয় বাড়ে...)

৪. শিক্ষার্থীদের টিউশনি ছাড়া কাজ করার পরিবেশ দেশে নেই। যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা। উন্নত দেশের কোনো মানুষই জন্মের পর প্রথম ২৫ বছর বাপের টাকায় চলে না।

এসব ক্ষেত্রে বাবা-মার পরিশ্রম সন্তানদের থেকে কেবল সফলতা আশা করে। এর অন্যটি হলে অভিভাবকরা সন্তানদের তুলনামূলক করে তোলে, বন্ধুমহলে তলব করে, পারিবারিক গোপনীয়তা হারায়। ফলে সন্তানদের মর্যাদা কমতে থাকে যা ধীরে ধীরে বড় মানসিক সমস্যা তৈরি করে।

পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রত্যাশা ভালো অভিভাবকত্বের অনুশীলন। যেখানে অভিভাবক হওয়ার আগে প্রস্তুতি গ্রহণ একটা ভালো পরামর্শ।

লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

 

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এসকেএস