ধর্ষণের অভিযোগ তোলা সহকর্মীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২১, ২০:০০ | আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২১, ২০:১৯

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ধর্ষণের অভিযোগ তোলা সহকারী শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে অবশেষে বিয়ে করেছেন তার সহকর্মী প্রধান শিক্ষক আযহারুল ইসলাম। শনিবার দিবাগত রাতে ওই শিক্ষিকার বাড়িতে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়।

শিক্ষিকা খাদিজা বেগম ফোনে বলেন, ‘আমরা বিয়ে করেছি। বিয়েতে ছয় লাখ টাকা দেনমোহর ধরা হয়েছে। আর উশুল (দেনমোহরের পরিশোধিত অংশ) ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা। আমি প্রধান শিক্ষককে বিয়ে করে খুবই খুশি হয়েছি। তাকে নিয়ে আমি সুখে সংসার করতে চাই।’

এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, স্থানীয় আজহারুল গাজী, ইউসুফ মোল্লা, নাজমুল বালা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মহাসিন মাস্টার উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মনির বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আযহারুলের প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েই খাদিজা-আযহারুলের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে উকিল বাবা হন স্থানীয় আজাহার গাজী।’

এর আগে শনিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক আযহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সখিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা খাদিজা বেগম।

আযহারুল ইসলাম সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের মাগন ব্যাপারীর কান্দি গ্রামের আব্দুর রব ব্যাপারীর ছেলে। তিনি ৪৪ নম্বর তারাবুনিয়া মাঝি বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর শিক্ষিকা খাদিজা বেগম একই উপজেলার ৮০ নম্বর চরসেনসাস মাঝের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।

২০১৩ সাল থেকে খাদিজা বেগমের সঙ্গে আযহারুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক। গত ২২ জুলাই বিকালে আযহারুলের স্ত্রী ও সন্তান তার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যায়। বাড়ি ফাঁকা থাকায় রাতে প্রধান শিক্ষক আযহারুল ওই শিক্ষিকাকে ফোন করে তার বাড়িতে আসতে বলেন।

আযহারুলের কথামতো রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষিকা সেখানে আসেন। তখন বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একটি কক্ষে ওই শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করেন আযহারুল। পরে বিয়ের কথা বললে আযহারুল ওই শিক্ষিকাকে চুপচাপ বাড়ি চলে যেতে বলেন। তবে ওই শিক্ষিকা বিয়ে না করা পর্যন্ত বাড়ি থেকে যেতে অস্বীকৃতি জানালে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

একপর্যায়ে শিক্ষিকাকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে শিক্ষিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ওই প্রধান শিক্ষক ও তার আত্মীয়রা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হবে।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, শনিবার বিকালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক সহকারী শিক্ষিকা। পরে শিক্ষিকাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন শুনলাম তারা নাকি বিয়ে করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/কেএম)