মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি, দুই পুলিশ কর্মকর্তার বদলি

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২১, ২১:৫৮

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে মামলার ভয় দেখিয়ে নয় লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুই কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সাইবার ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন এবং একই ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত আলম।

চলতি বছরের ২৭ মে পুলিশ পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন এবং  উপপরিদর্শক শওকত আলম বগুড়া সদরের শিকারপুর গ্রামে মাস্টার বিড়ি ফ্যাক্টরিতে যান। এরপর ফ্যাক্টরির গোডাউনে বিপুল পরিমাণ জাল ব্যান্ডরোল মজুদ আছে জানিয়ে মাস্টার বিড়ির স্বত্ত্বাধিকারী হেলালকে ডেকে আনেন। গোডাউন খোলার পর বিপুল সংখ্যক  ব্যান্ডরোল পাওয়া যায়।

এ সময় প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী হেলাল দাবি করেন সেগুলো বৈধ। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যান্ডরোলসহ হেলালকে ডিবি অফিসে যেতে হবে বলে জানান। একপর্যায়ে তারা হেলালের সঙ্গে বৈঠকে বসে তাকে জানান এসপি সাহেবের তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান হয়েছে। এসপি সাহেবকে ম্যানেজ না করতে পারলে ব্যান্ডরোলসহ হেলালের নামে মামলা দিতে হবে।

পুলিশ কর্মকর্তারা হেলালকে বলেন, এসপি সাহেবসহ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দুই কোটি টাকা লাগবে। একপর্যায়ে ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হন হেলাল। এরপর ওই রাতেই হেলাল নয় লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাদের হাতে দেন এবং বাকি টাকা পরে দিতে চান। কিন্তু অবশিষ্ট ১৬ লাখ টাকা দিতে টালবাহানা করতে থাকেন।

১১ জুলাই বগুড়ার এসপি আলী আশরাফ ভুঞার বদলির আদেশ হয়। ‘এসপি সাহেব’ চলে যাচ্ছেন, টাকা দিতে হবে জানিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা হেলালকে চাপ দিতে থাকেন। এরপর হেলাল তার এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ১৩ জুলাই বিষয়টি বগুড়ার পুলিশ সুপারকে জানান। ঘটনা জানার পর পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিক হেলালকে অফিসে ডেকে শুনেন এবং হেলালের কাছ থেকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নেন।

বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, গত ১৪ জুলাই সন্ধ্যার পর ওই ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে নেয়া নয় লাখ টাকা তারা ফেরত দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাশন) আলী হায়দার চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শনিবার রাতে এসআই শওকত আলমকে সাময়িক বরখাস্ত এবং পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিনকে রাজশাহী রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়। রবিবার তাদের দুজনকেই রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআর এফ) রাজশাহীতে বদলি করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/কেএম)