‘আমার বাবার জীবন নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল’

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১১:০১ | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০২১, ০৮:৫৭

করোনার রোগী না হওয়ার পরও বাত-ব্যথার রোগীর নানা পরীক্ষার পর করোনা আছে জানিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এখান থেকে রোগী নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে ভর্তি করে পরীক্ষায় আসে করোনা নিগেটিভ। রোগীর ছেলে ঢাকাটাইমসকে বলেন, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল তার বাবার জীবন নিয়ে খেলা করেছে।

ফিরিয়ে দেওয়ার আগে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল ওই রোগীর কাছ থেকে করোনা পরীক্ষাসহ নানা খাতে টাকাও আদায় করে নিয়েছে বলে রোগীর স্বজনরা জানান।

গত ১৯ জুলাই রাত ১০টা। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে ষাট বছরের মোশাররফ হোসেন বাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা নিয়ে আসেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে। হাঁটা-চলা করতে পারেন না। অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় এসেছেন। সঙ্গে তার স্ত্রী, ছেলে মেহেদী হাসান এবং নাতি রবিউল আউয়াল।

ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকায় এসে তারা প্রথমে যান শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে। সেখানে রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামাতে বেশ কিছুক্ষণ সময় নেয়। পরে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং তার বুকে সিটি স্ক্যান করা হয়। পরে তার স্বজনদের বলা হয়, তার ফুসফুসে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। তাকে এখানে ভর্তি করা যাবে না।

মোশাররফ হোসেনের সঙ্গীরা ইতিমধ্যে জেনেছেন এই হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য শয্যা বরাদ্দ আছে। রোগী অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর আগে হাসপাতালের লোকজন তাদের কাছে জানতে চায় রোগী করোনার পেশেন্ট কি না। যদি করোনার পেশেন্ট হন তাহলে সেভাবেই ভর্তি ও চিকিৎসা করা হবে।

সে কথা জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা কানে তোলেনি। তাদের অন্য হাসপাতালে যেতে বলা হয়।

তারা বাধ্য হয়ে রোগী নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, তার শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ নেই। তাকে সেখানে ভর্তি করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

এরপর মোশাররফ হোসেনকে ঢাকা মেডিকেলের ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ নম্বর বিছানায় ভর্তি করা হয়। পরদিন তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। এবং ২২ জুলাই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

ভুুক্তভোগী মোশাররফের ছেলে মেহেদী হাসান হাসিব ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার আব্বুর জীবন নিয়ে খেলা করেছে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল। তারা রোগী নামাতে অনেকক্ষণ দেরি করেছে। পরে তারা সিটিস্ক্যান করে আমার কাছ থেকে সাত হাজার ৬৩২ টাকা নিয়ে আব্বুকে ফিরিয়ে দেয়। করোনার কথা বলে তারা আব্বুকে ফিরিয়ে দিলে আমরা ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে নিয়ে যাই, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ সেখানে করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। আব্বা করোনার পেশেন্ট নন।’

এ ব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. আল ইমরান চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া দেননি। পরে তার ওই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। এরপর তাকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু ওই ক্ষুদেবার্তারও জবাব দেননি তিনি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের পরিচালক অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এএ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :