লাল গ্রহ মঙ্গলেও ভূমিকম্প হয়!

প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০২১, ১০:৪২

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পৃথিবীর প্রতিবেশি গ্রহ মঙ্গল। লাল এই গ্রহের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর মতোই। পৃথিবীর কেন্দ্রভাগে যেমন রয়েছে গলিত লাভার স্তূপ, ঠিক তেমনই লালগ্রহের কেন্দ্রভাগটিও গঠিত হয়েছে গলিত পদার্থ দিয়েই। তাতে কম্পনও হয়। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এমনটাই হয় মঙ্গলে গ্রহে। তবে তা লাভা কি না, তা জানা যায়নি। ২০১৮ সালে মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণ করে ইনসাইট ল্যান্ডার। এই ল্যান্ডারটিই সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহের সম্পর্কে এই নয়া তথ্য দিয়েছে।

পৃথিবীতে যেমন ভূমিকম্প হয়, তেমনই হয় লালগ্রহেও। সেখানেও পৃষ্ঠতল কেঁপে ওঠে। ইনসাইট ল্যান্ডার যান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা লালগ্রহের মাটিতে এখনও পর্যন্ত ৭৩৩টি কম্পন (ভূকম্প অর্থাৎ ‘আর্থকোয়েকে’র সঙ্গে মিল রেখে মঙ্গলের কম্পনকে অভিহিত করা হয়েছে ‘মার্সকোয়েক’ হিসাবে) রেকর্ড করেছে। আর এর মধ্যে ৩৫টির প্রাবল্য, রিখটার স্কেল অনুযায়ী ৩ থেকে ৪-এর মধ্যে। এই নয়া তথ্যগুলি সায়েন্স জার্নালের তিনটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

মঙ্গলের মাটিতে যে কম্পন হয়, সেই তথ্য সামনে আসার পরই এ নিয়ে গবেষণা করতে মাঠে নেমে পড়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা। এই তথ্যকে হাতিয়ার করে তারা মঙ্গলের মাটির গঠন জানার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে নাসা জানিয়েছে, ‘পৃথিবীর মতোই মঙ্গলও উষ্ণ হয়ে ওঠে, কারণ, দুইটি গ্রহই ধুলোকণা এবং সূর্যকে পরিক্রমণকারী আবহাওয়া গঠনের উপাদানের বড় বড় অংশ দিয়ে তৈরি। এগুলোই সৌরজগৎকে প্রাথমিক আকার দিয়েছে। তবে প্রথম দশ লক্ষ বছরে মঙ্গল গ্রহ ‘ডিফারেনসিয়েশন’ নামে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। যার জেরে এটি তিনটি সুস্পষ্ট স্তর যেমন ক্রাস্ট , ম্যান্টল এবং কোরে এ বিভক্ত হয়েছে। ইনসাইট ল্যান্ডারের মিশনের একটা উদ্দেশ্য ছিল, এই তিনটি স্তরের গভীরতা, আকার এবং কাঠামো পরিমাপ করা।’

গবেষণার সময় বৈজ্ঞানিকরা দেখেছেন যে, যতটা ভাবা হয়েছিল, তার তুলনায় ক্রাস্ট অংশটি অনেকটাই পাতলা। এর দুই তিনটি উপস্তর থাকাও অসম্ভব নয়। লালগ্রহে ক্রাস্ট ম্যান্টলের উপরে অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত।

ম্যান্টল অংশটির বিস্তার প্রায় ১,৫৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। আর মঙ্গলের কেন্দ্রই হল এর ‘কোর’ অংশ, যার ব্যাসার্ধ ১৮৩০ কিলোমিটার। 

এত মিল থাকা সত্ত্বেও কিছু ব্যতিক্রমও অবশ্য রয়েছে। যেমন পৃথিবীর মতো টেকটনিক প্লেটসমূহ (ভূপৃষ্ঠ একাধিক মহাদেশীয় এবং মহাসাগরীয় পাতে বিভক্ত) মঙ্গলে নেই। লালগ্রহের পুরোটাই এক অতিবিশাল প্লেট। তবে সেখানে রয়েছে অগ্ন্যুৎপাত-সক্রিয় এলাকা। যার ফলে এখানকার মাটি থেকে অনুরণনকারী শব্দ শোনা যায়। 

সিসমিক এক্সপেরিমেন্ট ফর ইন্টিরিয়র স্ট্রাকচারের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকরা নানা ধরনের কম্পনের শব্দ লালগ্রহের মাটি থেকে শুনতে পেয়েছেন। তাদের ধারণা, মঙ্গলপৃষ্ঠে চ্যুতি বা পাথরে ফাটল সৃষ্টি কম্পনজনিত কারণেই হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এজেড)