স্ত্রীর প্রতি সন্দেহে ছেলেকে হত্যা করেন বাবা

প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০২১, ১২:৩৩ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২১, ১২:৪০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
অভিযুক্ত বাবা বাদল মিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবা বাদল মিয়ার হাতে খুন হয়েছে নয় বছরের শিশু সায়মন। রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে শিশু সায়মনকে হত্যার কথা স্বীকার করে বাদল মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে বাদল মিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলামের কাছে শিশুপুত্রকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৫১ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে বাদল জানান, স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের কারণে সায়মনকে হত্যা করেছেন তিনি।

ওসি একরানুল জানান, বাদল মিয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। বাদল মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে সায়মন বড়। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র। আদালতের বরাত দিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল ইসলাম বলেন, সন্দেহের বশে বাদল মিয়া তার ছেলেকে খুন করেছে। গত শনিবার সকালে বাদল মিয়া তার ছেলে সায়মনকে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে ঘাস কাটতে যায়। এ সময় সে সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করে তার লাশ ধানি জমিতে ফেলে দেয়। পরে সকালে বাদল মিয়া বাড়িতে এসে শিশু সায়মনকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলেমিটার দূরে ধানি জমি থেকে গলাকাটা অবস্থায় শিশু সায়মনের মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ শিশু সায়মনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাদল মিয়াকে থানায় নিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে বাদল মিয়া জানান, দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থেকে ২০১২ সালে সে দেশে ফিরে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের দেওয়ান পাড়ায় বিয়ে করেন। বিয়ের ৫ মাস পর তিনি পুনরায় সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে যাওয়ার দুই মাস পর সায়মনের জন্ম হয়। এতে তার মনে সন্দেহ হয় এই ছেলে তার কিনা। এক বছর পর বাদল মিয়া আবারো দেশে ফিরে আসেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বিয়ের আগে তার স্ত্রীর সাথে বশির নামে এক ছেলের সম্পর্ক ছিল। বাদল মিয়ার সন্দেহ হয় সায়মন বশিরের সন্তান। এছাড়া সায়মনের পরে আরো দুই ছেলের জন্ম হয় তার। কিন্তু সেই দুই ছেলের সঙ্গে সায়মনের চেহারার কোন মিল নেই। দুই ছেলের সাথে সায়মনের চেহারার মিল না থাকায় বাদল মিয়ার সন্দেহ আরো শক্ত হয়। এসব সন্দেহের কারণে সে সায়মনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার ভোর বেলা সে সায়মনকে ঘুম থেকে তুলে তার সাথে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে গলাকেটে হত্যা করে লাশ জমিতে ফেলে দেয়।

ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে বাদল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৬ জুলাই/পিএল)