যৌতুকের বলি গৃহবধূ মীম, কাঁদছে দুধের শিশু

ময়মনসিংহ ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০২১, ২১:২৫

ময়মনসিংহের ফুলপুরে যৌতুকের বলি হয়েছেন এক গৃহবধূ। মাদকসেবী স্বামী ইকবাল হোসেন সবুজের প্রহারে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। এদিকে মায়ের বুকের দুধের জন্য কাঁদছে ছয় মাস বয়সী কন্যা শিশু সিয়া।

নিহত গৃহবধূর নাম নুসরাত জাহান মীম (২০)। তিনি ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ রোড সংলগ্ন পৌর এলাকার গোদারিয়া গ্রামের মৃত বাবুল মিয়ার মেয়ে।

ঘটনার পর থেকে মীমের স্বামী ও শ^শুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় মীমের মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে আমুয়াকান্দা এলাকার মৃত আদম আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন সবুজের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে নুশরাত জাহান মীমের। পরে ২০১৮ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ব্যবসার কথা বলে প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়। এরপর আবারও যৌতুকের জন্য মীমকে চাপ দেয় স্বামী সবুজ। প্রায় এক বছর যাবত যৌতুকসহ বিভিন্ন জিনিসের বায়না করে মারধর করা হতো মীমকে। কিন্তু প্রেমের বিয়ে বলে মাকেও কিছু না জানিয়ে সব নীরবে সহ্য করতেন মীম। এ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে পাষণ্ড স্বামী সবুজ যৌতুকের জন্য মীমকে রুটি বানানোর বেলান দিয়ে বেদম মারধর করেই ক্ষান্ত দেননি। এক পর্যায়ে তার ছয় মাসের শিশু কন্যার ন্যাকড়া গলায় পেঁচিয়ে তাকে টানাহেঁচড়া করে ও ঘরের দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় মীমকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় মীম মারা যায়। কোতোয়ালি থানা পুলিশ মীমের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্ত শেষ করার পর পরিবারের কাছে লাশ হন্তান্তর করে। পরে রবিবার রাতেই পৌরসভার গোদারিয়া এলাকায় বাবার বাড়িতে মীমের লাশ দাফন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নিহতের মা সুরাইয়া আক্তার বাদী হয়ে রবিবার রাতে ফুলপুর থানায় ইকবাল হোসেন সবুজ ও তার মাসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মীমের মা সুরাইয়া বেগমের কান্নায় ও আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। কান্নারত অবস্থায় তিনি বলেন, কয়েক দফা মেয়ের সুখের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল ও নগদ অর্থ দেওয়া হয় যৌতুক লোভী পরিবারকে। এরপরও মেয়ের ওপর সবসময় শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার আর নির্যাতন চালানো হতো। ভয় ও মান-সম্মানের জন্য মেয়ে মীম তা প্রকাশ করেনি। আমার এতিম মেয়ে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে ও মেয়েকে নিয়েই বেঁচে আছি। আমি শুধু আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। আমি আর কিছুই চাই না।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ময়নাতদন্তের পর রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :