ঝুঁকির মুখে মিছাখালী রাবার ড্যাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২১, ১৪:৪৫ | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২১, ১৪:২৪

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মিছাখালী রাবার ড্যাম অরক্ষিত পড়ে আছে। চলতি বছর রাবার ড্যামের ভেতর থেকে সম্পূর্ণ পানি বের না করায় এই বর্ষা মৌসুমেও প্রতিটি স্প্যানের উভয় দিকই পানির ওপরে ভেসে রয়েছে। স্প্যানের মধ্যবর্তী অংশ তিন-চার ফুট পানির নিচে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থায় ড্যামের উপর দিয়ে দিনরাত বালু পাথর বোঝাই ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলাচল করছে। ফলে চলন্ত ট্রলারের ফ্যানের আঘাতে রাবার কেটে ড্যাম ক্ষতবিক্ষত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

কামাল হোসেন,সুহেল আহমদ সাজুসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকরা জানান,আগামী ফসল মৌসুমে পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যার পানি আটকানো কঠিন হবে। এছাড়া রাবারে পানি থাকার কারণে হাওরে পানি কম নিষ্কাসন হবে। এবারের বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে মরা জাদুকাটা নদীর পাড়ের ঘর বাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকাও রয়েছে।

আঙ্গারুলী হাওর ও সোনার হাওরের বোর ফসল আগামবন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে সুরক্ষার দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছিল ২০১৪ সালে। রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটি সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা ব্যক্তিগতভাবে এর ব্যয় ভার নির্বাহ করে আসছিলেন। গত বছর তিনি ও তার কমিটি বিএডিসির কাছে রাবার ড্যামের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে রাবার ড্যাম পরিচালনার জন্য একটি নতুন পরিচালনা কমিটি হয়। তবে ড্যাম পরিচালনার জন্য সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ না থাকায় উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাবারড্যামের বিদ্যুৎ বিলসহ যাবতীয় ব্যয়ভার নির্বাহের জন্য আঙ্গারুলী হাওরের সুবিধাভোগী কৃষকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় হত। কিন্তু পরিচালনা কমিটি এবার সেটি করতে পারেনি।

রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষকরা উপজেলা সেচ কমিটির দেওয়া নির্ধারিত হারে টাকা দিতে পারছেন না। ফলে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ আর রাবারের ভেতর থেকে পানি বের করা হয় নি। এই বিষয় পরিচালনা কমিটি এবং বিএডিসির কর্তৃপক্ষকেও অবগত করা হয়েছে।

রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ এরশাদ মিয়া জানান, প্রতিবছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা কৃষকদের উপর ছেড়ে না দিয়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এর ব্যয়ভারের দায়িত্ব নিলে সরকারের ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যামটি সুরক্ষিত সব সময় কৃষকদের থেকে চাঁদা আদায় সম্ভব হয় না।

সুনামগঞ্জ বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী হোসাইন মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান জানান,গত বছর অনেক চেষ্টা করে তহবিল সংগ্রহ করে রাবারের ছিদ্র মেরামত ও আনুষাঙ্গিক কাজ হয়েছিল। আগামী বছর এভাবে অর্থ দেবার কোনো সুযোগ নেই। পরিচালনা কমিটি এখনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন নাই। রাবারের ভেতরের পানিও বের করেন নি। এতে রাবারটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :