আখাউড়ায় ভ্যাকসিন নিতে উপচেপড়া ভিড়, সংক্রমণের শঙ্কা
সারাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় করোনার ভ্যাকসিন নিতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরে শত শত মানুষ ভ্যাকসিন নিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন। এসময় মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। একে অপরের সাথে ঘেষাঘেষি করে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন ভ্যাকসিন প্রত্যাশীরা। কার আগে কে ভ্যাকসিন নেবে এ নিয়ে এক রকম প্রতিযোগিতা চলছে। আর এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনা ভ্যাকসিন নিতে এসে করোনার সংক্রমণ নিয়ে ফিরছেন কিনা এমন আতঙ্কের কথাও বলছেন ভ্যাকসিন গ্রহিতারা।
জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে আখাউড়ায় সাধারণ মানুষের টিকা নেয়ার আগ্রহ বাড়তে থাকে। কেউ দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার মেসেজ পেয়ে আসছেন, আবার অনেকে মেসেজ না পেয়েও ভিড় করছেন হাসপাতালে। এ অবস্থায় বেশ কয়েক দিন ধরে টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার জন্য আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোকজনের উপস্থিতি বাড়ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, বেশকিছু টিকা দেওয়া বন্ধ থাকার পর গত ২৪ জুলাই থেকে টিকা দেওয়া শুরু হয়। গত ৪ দিনে ৮৪৪ জন মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। প্রতিদিন ২ থেকে ৩০০ লোক ভ্যাকসিন নিতে আসছেন। এ পর্যন্ত ১ম ডোজ নিয়েছেন ৩ হাজার ৯৪০ জন, ২য় ডোজ নিয়েছেন ২ হাজার ৬৩০ জন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আখাউড়া উপজেলায় প্রায় ৪০০ লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান বুথের সামনে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক মানুষ লাগালাগি করে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। বেশির মানুষের মুখে মাস্ক থাকলে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
এ সময় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা নেই। ফলে এখান থেকেই করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। দ্রুত বুথ বা কেন্দ্র বাড়ানো উচিত।
পৌর শহরের দেবগ্রাম থেকে সপরিবারে টিকা নিতে আসা সোহেল দেওয়ান জানান, সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষায় আছি এখনও সিরিয়াল পাইনি পাইনি। ভিড় দেখে ভয় লাগছে টিকা নিতে এসে আবার করোনা নিয়ে ঘরে ফিরব না তো?
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কুড়িপাইকা গ্রামের মাসুদ ভূইয়া বলেন, দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা নিয়েছি। মানুষের ভিড় দেখে ভয় হচ্ছে করোনা থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন দিতে এসে করোনার সংক্রমণ হয় কিনা। কারণ এখানে কেউ করোনায় আক্রান্ত কিনা আমরা তো জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শ্যামল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার রেজিস্ট্রেশন করার পর টিকা গ্রহিতাকে হাসপাতালে আসার তারিখ উল্লেখ করে একটি ম্যাসেজ দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যাসেজ পাওয়ার আগেই বহু মানুষ ভ্যাকসিন নিতে চলে আসছেন। এজন্য অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষ যদি নিজে সচেতন না হয়, তাহলে তাদের জোর করে সচেতন করা সম্ভব নয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ২টি পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/এলএ)